Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

কাবিননামা লেখার নিয়ম: বিয়ের আগে কাবিননামার যে ধারা সম্পর্কে জানা জরুরি!

Last updated on April 12th, 2024

কাবিননামা লেখার নিয়ম

বিয়ে হচ্ছে প্রতিটি নারী পুরুষের প্রাকৃতিক জৈবিক সম্মতির সম্পর্ক। যে শুদ্ধ সম্পর্কের মাধ্যমে প্রতিটি প্রাপ্তবয়স্ক নারী পুরুষ আজও পৃথিবীর বুকে মানবের আবাস জারি রেখেছেন। আর এই সম্পর্কটির জোড়া লাগা, টিকে থাকা, কিংবা ভেঙ্গে যাওয়া সব কিছুই নির্ভর করে একটি কাগজের উপর। আর সেটি হলো কাবিননামা। 

কাবিননামা হলো স্বামী-স্ত্রীর পরস্পরের মধ্যে   একটি অঙ্গীকারপত্র কিংবা চুক্তিপত্র। যে চুক্তিপত্রের মাধ্যমেই প্রতিটি স্বামী স্ত্রী দুটি জীবনের দুটি পথকে একটি রাস্তায় চলার জন্য শপথ গ্রহণ করেন। আর তাই এই কাবিননামার চুক্তিপত্রটি প্রতিটি মানুষের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

নিকাহনামা বা কাবিননামায় সর্বমোট ২৫ টি কলাম বা ধারা রয়েছে। এর মধ্যে বিশেষ করে ১৭, ১৮ ও ১৯ নং কলামে অজ্ঞতা বশত অধিকাংশ পুরুষ জেনে অথবা না জেনেই ভুল করে থাকে; যার চরম মাশুল গুনতে হয় যদি কোনো কারণে দাম্পত্য জীবনে ফাটল ধরে তখন।

তাই আজ আমরা কাবিননামা কীভাবে লিখবেন সেই বিষয়ে আলোচনা করব। সেইসাথে আরও আলোচনা করব যেসব ভুলের কারণে আশা নিয়ে বাসা বাঁধা সুখের সংসারে অশান্তি সৃষ্টি হয় এবং কী পদক্ষেপ নিলে এমন ঘটনা ঘটনার সম্ভবনা অনেকাংশে কমে যাবে।

তো চলুন শুরু করা যাক—

কাবিননামা কী?

আমরা সবাই জানি যে বিয়ে করতে হলে অবশ্যই কাবিননামা স্বাক্ষরিত করতে হবে। অর্থাৎ এই চুক্তিপত্র ছাড়া বর্তমান সময়ে কোনো বিয়েই বৈধ নয় (যদিও ইসলামী শরিয়াহ মোতাবেক বিয়ে বৈধ হওয়ার সাথে কাবিননামার কোনো সম্পর্ক নেই)। যেকারণে সঠিকভাবে কাবিননামা লেখা এবং জানা আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

অনেকেই মনে করেন কাবিননামা মানেই হলো শুধু কাবিন বা মোহরানার টাকার দলিল। কিন্তু কাবিননামা শুধু মোহরানার দলিল নয়। বরং স্বামী স্ত্রীর ভবিষ্যৎ সংসারের একটি দিকনির্দেশনা। আর তাই কাবিননামাতে সঠিক ও প্রয়োজনীয় নির্দেশগুলো উল্লেখ করা জরুরি। এই কাবিননামাই একটি স্বামী স্ত্রীর সম্পর্কের দুনিয়াবী দলিল। 

আরও দেখুন: কেমন মেয়ে বিয়ে করবেন: পাত্রী নির্বাচনে করণীয়

কাবিননামা কেন গুরুত্বপূর্ণ 

আমাদের দেশে কাবিননামাকে এখনও পর্যন্ত গুরুত্বসহকারে দেখা হয় না। আমাদের বিয়েগুলোতে শুধু মোহরানা কত সেটাকেই গুরুত্ব দেওয়া হয়। অথচ কম মোহরানা দিলেও কাবিননামাতে শর্ত ঠিকমতো উল্লেখ না করলে বিয়ে পরবর্তী জীবনে নানান ঝুটঝামেলা দেখা দেয়। যে ঝুটঝামেলা একসময় বড় আকার ধারণ করে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিবাহবিচ্ছেদ বা ডিভোর্স পর্যন্ত গড়ায়। 

তাই বিয়ের আগে কাবিননামা সম্পর্কে জানা এবং বুঝা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে আমাদের দেশে কাবিননামায় এমন কিছু ধারা উপধারা রয়েছে, যা একজন স্বামীর জন্য খুবই জরুরি। কেননা ইসলামী শরিয়াহ অনুসারে বিয়ে হলেও সরকার  কাবিননামার বিভিন্ন ধারা বিয়েতে যুক্ত করেছে।

যেকারণে এইসব শর্ত সম্পর্কে একজন স্বামী অবগত না থাকার ফলে বিয়ে পরবর্তী জীবনে নানান জটিলতার মুখোমুখি হতে হয়। যদি বিয়ের আগে এইসব শর্ত কিংবা ধারা একজন স্বামী এবং স্বামীর অভিভাবকরা জেনে থাকলে বিয়ে পরবর্তী স্বামী স্ত্রীর মধ্যে মনোমালিন্য হলেও তা তারা দ্রুত সমাধান করতে পারে।

একইসাথে স্ত্রীরা যে আবেগের বশবর্তী হয়ে কোনো চিন্তা ধারা না করেই সামান্য কথা কাটাকাটি কিংবা ছোটোখাটো বিষয় নিয়ে স্বামীর সাথে ঝগড়া ঝাঁটি করে তালাক কিংবা ডিভোর্সের পর্যায়ে চলে যায়, তা থেকেও পরিত্রাণ পেতে হলেও কাবিননামার ধারা সম্পর্কে অবগত থাকা খুবই জরুরি।

বিশেষ করে কাবিননামায় ১৭, ১৮, ১৯ নং ধারায় এমন কিছু আছে, যা একজন স্বামীকে ধ্বংস করে দিতে এবং একজন স্ত্রীর জীবন নষ্ট করতে যথেষ্ট। আর এটা এই কারণেই যে, এইসব ধারায় স্ত্রীদের এমন কিছু ক্ষমতা দেওয়া হয়, যা তারা তাদের জ্ঞানের স্বল্পতা এবং আবেগের উচ্ছলতার কারণে ক্ষমতার অপব্যবহার করে ফেলে। 

এরফলে তারা কোনো প্রকার ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললে সেখান থেকে আর ফিরে আসার আর কোনো পথ খোলা থাকে না। তাই কাবিননামার এইসব গুরুত্বপূর্ণ ধারাগুলো জানা এবং এর সঠিক ব্যবহার করা প্রত্যেকের জন্য খুবই জরুরি।

প্রদত্ত কাবিননামার ফরম বা ছবি পরিস্কার দেখতে না পেলে ডাউনলোড করে দেখুন।

কাবিননামায় বিশেষ কী কী শর্ত থাকে 

বিয়ের কাবিননামায় ১৭, ১৮, ১৯ নাম্বার ধারাগুলো গুরুত্বপূর্ণ হলেও সবচেয়ে বেশী দরকারি ধারা হলো ১৮ নাম্বার ধারা। আমরা যদি ধারা গুলো সম্পর্কে হালকা ধারণা নিতে চাই তাহলে বলব, ১৭ নাম্বার ধারাতে রয়েছে, “বিশেষ শর্তাদি থাকিলে তাহা: …।” অর্থাৎ এই বিয়েতে স্বামী চাইলে স্ত্রী কী কী করতে পারবেন। এবং স্ত্রী চাইলে স্বামী কী কী করতে পারবেন তা উল্লেখ করতে পারেন।

এতে করে বিয়ে পরবর্তীতে কোনো ঝামেলা হলে শর্তগুলোর আলোকে সঠিক সমাধান পাওয়া যায়। যেমন কোনো কারণে স্বামী স্ত্রীকে ভরণপোষণ দিতে ব্যর্থ হলে, চাইলে স্ত্রী চাকরি বাকরি করতে পারবে। অথবা স্বামী চাইলে স্ত্রীকে চাকরি বাকরি করতে হবে। অথবা কোনো অবস্থাতেই স্ত্রী চাকরি বাকরি ইত্যাদি করতে পারবে না। এমনও শর্ত থাকতে পারে স্ত্রীকে সবকিছু পরিপূর্ণ করে দেওয়ার পর শরিয়ত সম্মত কারণে স্বামী চাইলে একাধিক বিয়ে করতে পারবেন। এতে স্ত্রীর সম্পূর্ণ সম্মতি থাকবে ইত্যাদি যার যেমন শর্তের প্রয়োজন তা উল্লেখ করা।

সবচেয়ে বেশী গুরুত্বপূর্ণ ধারা হলো ১৮ নাম্বার ধারাটি। যেখানে উল্লেখ করা হয়েছে যে, “স্বামী স্ত্রীকে তালাক প্রদানের ক্ষমতা অর্পণ করিয়াছে কি না? করিয়া থাকিলে কি কি শর্তে: …।” একইসাথে ১৯ নাম্বার ধারায় বলা হচ্ছে, “স্বামীর তালাক প্রদানের অধিকার কোন প্রকারে খর্ব হইয়াছে কি না?”

ইসলামী শরিয়া আইন অনুযায়ী স্ত্রী কখনোই স্বামীকে তালাক দিতে পারেন না। তবে শরিয়তের নির্দেশ অনুযায়ী স্ত্রী চাইলে অভিভাবকদের মাধ্যমে তালাকের একটি ব্যবস্থা করতে পারেন। এতে করে কোনো স্ত্রী তার স্বামীকে শরিয়ত সম্মত কারণে অপছন্দ করলে, স্ত্রী চাইলে অভিভাবকদের নিয়ে ওই স্বামী থেকে তালাক নিতে পারেন।

তবে এই বিষয়টি সম্পূর্ণ উভয়ের অভিভাবকদের মাধ্যমেই হতে হবে। ইসলাম স্ত্রীদের তালাক প্রদানের ক্ষমতা না দেওয়ার পেছনে প্রভূত কারণ রয়েছে। কেননা প্রাকৃতিক নিয়মেই নারী জাতি হচ্ছে খুবই আবেগপ্রবণ। একইসাথে নারীদের মধ্যে রয়েছে ধৈর্যহীনতা।

এই দুই কারণে অধিকাংশ নারীরা হুটহাট করে যেকোনো সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন। যেকারণে আজ বর্তমান সমাজে প্রচুর পরিমাণ নারী ডিভোর্সী হয়ে যাচ্ছেন। এর প্রধান কারণ হচ্ছে, নারীদের তালাক প্রদানের সরাসরি ক্ষমতা প্রদান। যা শরিয়ত বিরোধী।

একইভাবে ধারা ১৯-এ স্বামীকে শরিয়ত সম্মত অধিকার থেকে বঞ্চিত করার এক‌টি প্রয়াস রয়েছে। যেখানে সরাসরি স্বামীকে তালাক প্রদানের ক্ষমতা বাতিল করা হয়েছে। এই দুই ধারায় ইসলাম ও বাস্তবতা বিরোধী হওয়ায় একজন স্বামীকে এইক্ষেত্রে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। যা বিয়ের আগে কোনো পুরুষই জানতে পারে না।

আরও দেখুন: কেমন ছেলে বিয়ে করবেন: পাত্র নির্বাচনে করণীয়

এছাড়াও ২০ নং কলাম খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যা কোনো স্বামী কিংবা তার অভিভাবকরা কখনোই পূরণ করে থাকেন না। এই ধারায় উল্লেখ আছে, “বিবাহের সময় দেনমোহর, খোরপোষ ইত্যাদি সম্পর্কে কোন দলিল করা হইয়াছে কি না? যদি হইয়া থাকে উহার সংক্ষিপ্ত বিবরণ: …।” আমরা বিয়ের আগে কখনোই এইসব নিয়ে মাথা ঘামায় না বলে এ নিয়ে দলিল করার প্রশ্নই আসে না।

কিন্তু এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ যে, বিয়ের আগে অবশ্যই যেন ১৭, ১৮, ও ১৯ নাম্বার ধারা নিয়ে একটি নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে এফিডেভিট করে নেওয়া। আর এই এফিডেভিটের কথা ২০ নাম্বার কলামে উল্লেখ করা। 

অতএব আমাদের এইসব ধারা নিয়ে স্বামী স্ত্রী এবং তাদের অভিভাবকদের সচেতন হওয়া দরকার। যাতে একটি সুন্দর সোনার সংসার কোনো একটি ঠুনকো কারণে ভেঙে না যায়। আজকে আমরা এই পোস্টের মাধ্যমে এই ব্যাপারে জানলাম এবং একইসাথে এই ধারাগুলোর সঠিক ব্যবহার সম্পর্কেও জানাব ইনশা আল্লাহ।

আমরা যে ভুলগুলো করে থাকি

আমাদের অধিকাংশ বিয়েতে বিয়ের সময় তাড়াহুড়া থাকে বেশি। যেকারণে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আমরা বিয়েতে ভুলে যায়। এই তাড়াহুড়ার কারণে হোক কিংবা অজ্ঞতার কারণে হোক বিয়ের যে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় কাবিননামা, সেখানেই আমাদের ভুলগুলো হয় বেশী। 

আমরা সবাই একটি সুখী সুন্দর দাম্পত্য জীবনের জন্যই বিয়ে করে থাকি। বিয়ের আগে বা পরে যতদিন সংসারে কোনো ঝামেলা হয়না, ততদিন পর্যন্ত আমরা কাবিননামা সম্পর্কে কোনো কথা কারও সামনে তোলা পছন্দ করি না। তাই কাবিননামা বলতে বিয়ের আগে শুধু মোহরানা ধার্য করাকেই আমরা বুঝি। যেকারণে কাবিননামায় যে আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আছে বা থাকে সে সম্পর্কে আমাদের কোনো ধারণাই থাকে না।

অথচ কোনো কারণে যখন সংসারে অশান্তি সৃষ্টি হয় কিংবা সংসার টেকানো দায় হয়ে পড়ে তখনই আমাদের টনক নড়ে। আমরা দৌড়ে যাই কাজী অফিসে কাজীর দরবারে। তখন কাজীর পাজীগিরি দেখে আমাদের মাথায় হাত উঠে। কেননা বিয়ের আগে বা পরে সংকোচের কারণে আমরা কখনোই কাবিননামা পড়ে দেখি না বা কাজীও আমাদের এইসব বিষয় পরিষ্কার করে না। যারফলে আমাদের এমন সব ক্ষতি হয়ে যায়, যে ক্ষতি আমরা পুরো জীবন দিয়েও পোষাতে পারি না। তাই শুরুতেই আমরা দেখব আমরা কী কী ভুল করি। 

সরাসরি স্ত্রীকে তালাক গ্রহণের ক্ষমতা দেওয়া

যেহেতু বিয়ের আগে আমরা কাবিননামা যাচাই করে দেখি না, সেহেতু বিয়ের সময় কাজীরা নিজেদের মতো করেই এই ধারার মধ্যে সরাসরি স্ত্রীকে তালাক গ্রহণের ক্ষমতা দিয়ে দেন। যা স্বামী স্ত্রী উভয়ের জন্যই ক্ষতিকর। কেননা এই ক্ষমতার দাপটে কিছু কিছু স্ত্রী তাদের স্বামীকে এমনিতেই পছন্দ না হলে মোহরানার লোভে তালাক নিয়ে ফেলে। 

যা একজন ভালো স্বামীর জন্য খুবই দুঃখজনক। অথবা অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যায় স্ত্রী পরকীয়া করে এই ক্ষমতা খাটিয়ে সরাসরি স্বামী থেকে তালাক নিয়ে মোহরানাও আদায় করে আবার অন্যত্র বিয়েও করে ফেলে। যা একটি সংসারের জন্য খুবই খারাপ।

তাই এইক্ষেত্রে এইসব ভুল করা যাবে না। স্ত্রীকে সরাসরি তালাক গ্রহণের ক্ষমতা দেওয়া যাবে না।

গৎবাঁধা শর্তে তালাক গ্রহণের ক্ষমতা দেওয়া 

বিয়ের আগে আমরা যেহেতু কাবিননামা নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করি না। সেহেতু কাজী কী লিখে তাও যাচাই করি না। এই সুযোগে কিংবা আমাদের অজ্ঞতার কারণে কাজী ১৮ নং ঘরে তার ইচ্ছামত লেখা লিখে থাকে। যা পরবর্তীতে স্বামী স্ত্রীর উভয়ের জন্যই ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

যেমন অধিকাংশ ক্ষেত্রে লেখা থাকে “বনিবনা না হলে স্ত্রী তালাক গ্রহণ করতে পারবে।” এখানে কোনো সুনির্দিষ্ট শর্ত উল্লেখ নেই। যেকারণে সামান্য উনিশ বিশ হলেই নারীরা তালাকের জন্য কাগজ পাঠায় আর রাগের বশে ভবিষ্যৎ চিন্তা না করেই তালাক নিয়ে ফেলে।

এখানে বনিবনা বলতে আসলেই কী বোঝানো হয়েছে, তার সুস্পষ্ট উল্লেখ নেই। তাই এটা অনেকটা বিনা শর্তে তালাকের মতো হয়ে যায়। কোনো কারণে স্ত্রী চাইলে কোনো কারণ ছাড়াই তাদের স্বামীকে তালাক দিতে পারেন। এটা অনেকটাই স্বেচ্ছাচারিতার মতোন। 

নারীদের অধিকার আদায়ের জন্য এই ধরনের ধারা রাখা হলেও তা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই স্বামীদের বশ করতে কিংবা স্ত্রীদের অনৈতিক ইচ্ছা পূরণের জন্যই বেশী ব্যবহৃত হচ্ছে। যেকারণে এই কলাম এমনভাবে পূরণ করতে হবে, যাতে কারোরই অধিকার ক্ষুণ্ন না হয়। 

শর্ত ছাড়া স্ত্রীকে তালাক গ্রহণের ক্ষমতা দেওয়া

আমরা না জেনে বা জেনে হলেও অধিকাংশ বিয়ের কাবিননামায় স্ত্রীকে সরাসরি তিন তালাক গ্রহণের ক্ষমতা প্রদান করে ফেলি। এক্ষেত্রে কাজীরা লিখে থাকে “তিন তালাক গ্রহণের ক্ষমতা অর্পণ করা হয়েছে।” এখানে তারা কোনো শর্ত উল্লেখ করে না। ফলে কোনো কারণে সংসারে সামান্য ভুল বোঝাবুঝি হলেই স্ত্রীরা রাগের বশে সরাসরি তালাক গ্রহণ করে ফেলে।

যা পরবর্তীতে তাদের অনুশোচনার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। স্ত্রী আবেগের বশে তালাকের কাগজ পাঠিয়ে তালাক নিয়ে ফেললেও পরে আফসোস করতে থাকে। এবং আবার নতুন করে সংসার শুরু করতে চায়। কিন্তু আইন ও শরিয়তের কারণে এই সংসার টিকিয়ে রাখা সম্ভব হয় না। সুতরাং কখনোই সরাসরি তিন তালাকের ক্ষমতা দেওয়া উচিত নয়।

বিয়ের আগেই কাবিননামা লিখে ফেলা

বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কাজীরা বিয়ের সময় খুবই তাড়াহুড়ো করে। এর কারণ তাদের একইদিনে অনেক গুলো বিয়ে সম্পন্ন করতে হয়। যারফলে তারা এক জায়গায় বেশী সময় দিতে পারে না। এতে করে বিয়ে পড়াতে গিয়ে যথেষ্ট তড়িঘড়ি হয়ে যায়। 

আর এই তড়িঘড়ির জন্য তারা আগে থাকতেই বিয়ের কাবিননামা লিখে রাখে। এবং বিয়েতে উপস্থিত হয়েই বর কনের স্বাক্ষর নিয়ে ফেলে। যা সুস্পষ্ট শরিয়ত এবং ইসলাম বিরোধী। কেননা কাবিননামা দিয়ে বিয়ে সম্পন্ন হয় না। বরং বিয়ে সম্পন্ন হওয়ার পর কাবিননামা হলো একটি দলিল।

আর তাই বিয়ের আগেই কাবিননামা লিখার ফলে এখানে অনেক গুলো শর্ত রয়েছে, যা শুধু বিয়ের পরই লিখতে পারবে। এইসব শর্ত লিখতে গিয়ে কাজীরা সরাসরি মিথ্যার আশ্রয় নেয়। একইসাথে বিয়ের আগেই স্বামী স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার অনুমতি দেয়। যা কখনোই শুদ্ধ নয়। পরবর্তীতে এই স্ত্রী স্বামীকে তালাক দিলেও তা শুদ্ধ হবে না। এমনকি অন্যত্র বিয়ে করলেও তার আগের বিয়ে বহাল থেকে যাবে।

তাই কখনোই কোনো অবস্থাতেই বিয়ের কাবিননামা আগে থাকতে লিখতে পারবে না। আবার অনেকেই আছেন শুধু কাবিননামাকেই বিয়ে ধরে থাকে। আর এই কাবিন করেই সংসার করে। এটাও চরম মারাত্মক ভুল। কেননা ইজাব কবুল ছাড়া কখনোই বিয়ে শুদ্ধ হবে না।

অসম্পূর্ণ কাবিননামায় বরের স্বাক্ষর নেওয়া 

আগেই উল্লেখ করেছি আমাদের বিয়ে গুলোতে আমরা খুবই তাড়াহুড়া করি। যা সুস্পষ্ট শয়তানের কাজ। এই তাড়াহুড়োর সুযোগে কাজীরাও অনেক ফায়দা নেওয়ার চেষ্টা করে। যা খুবই অনৈতিক। কাজীরা তাদের সময় বাঁচাতে অনেক ক্ষেত্রে সাদা কাগজে বর কনের স্বাক্ষর নিয়ে ফেলে।

এই স্বাক্ষর নেওয়ার পর তারা তাদের মতো করে ১৮ নাম্বার ধারাটি পূরণ করে। অথচ বিয়ের আগে কোনোভাবেই বর স্ত্রীকে তালাক প্রদানের ক্ষমতা শরিয়ত সম্মতভাবে দিতে পারে না। কিন্তু আমাদের অজ্ঞতা এবং ভুলের কারণে তারা এইসব করার সুযোগ পায়। 

আর এটা সুস্পষ্ট প্রতারণার শামিল। এই সুযোগে অনেক কাজী এই ধারাতে এমন কিছু লিখে যা স্বামী স্ত্রী উভয়ের জন্য ক্ষতিকারক হতে পারে। তাই কখনোই এই ভুল গুলো করা যাবে না।

১৮ নং ধারায় শুধু ‘হ্যাঁ’ শব্দ লেখা

কাজীরা নিজেদের সুবিধার জন্য প্রায়ক্ষেত্রে ১৮ নাম্বার ধারায় শুধু হ্যাঁ অথবা না উল্লেখ করে কাজ শেষ করে ফেলে। যা সম্পূর্ণ অনুচিত। কেননা তালাক গ্রহণের ক্ষমতা অবশ্যই স্ত্রীর রয়েছে। তাই কখনোই না হবে না। আবার কোনো শর্ত ছাড়াই শুধু হ্যাঁ হলে, তা সরাসরি স্বামীর প্রতি জুলুম হবে।

কেননা এতে স্ত্রী স্বেচ্ছাচারী হয়ে সংসারে অশান্তি সৃষ্টি করে যখন তখন তালাক নিয়ে চলে যেতে পারে। এতে স্বামীর প্রতি অন্যায় করা হবে। তাই শুধু হ্যাঁ-না নয়। বরং শর্ত সাপেক্ষে হ্যাঁ/না দেওয়া যাবে।

১৮ নং ধারাটি খালি রেখে দেওয়া

কিছু কিছু ক্ষেত্রে দেখা যায় অভিভাবকরাই এই ১৮ নাম্বার কলামটি খালি রেখে দেন। কিংবা কাজীও বর কনে পক্ষকে এইসব বিষয় না জানানোর কারণে এই ঘরটি খালি থেকে যায়। যা একটি মারাত্মক ভুল। ঘরটি খালি থাকলে অবশ্যই তা স্ত্রীর উপর জুলুম হবে। একইসাথে তা শরিয়ত বিরোধীও হবে। তাই কখনোই এই ঘরটি খালি রাখা যাবে না। 

অতএব আমরা বুঝতে পারলাম কাবিননামা হলো শুধু একটা সরকারি ডকুমেন্ট। এটা শরিয়তের কিছুই নয়। বিয়ে হতে হবে শরিয়ত মোতাবেক। তাই বিয়ের আগে আমাদের উপরোক্ত বিষয় গুলো বিবেচনা করে কাবিননামায় স্বাক্ষর করতে হবে। যাতে কখনোই উপরোক্ত ভুলগুলো না করি।

আরও দেখুন: ডিভোর্স কেন বাড়ছে? বিবাহবিচ্ছেদ বন্ধে করণীয়

বিয়ের আগে করণীয়

আমরা এতক্ষণ জানলাম বিয়ের কাবিননামায় কী কী গুরুত্বপূর্ণ ধারা রয়েছে। এবং এইসব গুরুত্বপূর্ণ ধারাগুলো পূরণ করতে আমরা কী কী ভুল করে থাকি। তাই এখন আমরা জানব, বিয়ের আগে আমাদের কী কী সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।

আমরা ইতিমধ্যে জেনেছি ১৮ নং কলামে স্বামী স্ত্রীকে তালাক প্রদানের ক্ষমতা প্রদান করে থাকেন। এই ক্ষেত্রে আমাদের কিছু বিষয় অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে। কেননা বিয়ের আগে আমরা এইসব বিষয় সবই কাজীর হাতে ছেড়ে দেই। যারফলে তাদের গৎবাঁধা লেখার কারণে স্বামী স্ত্রীর সংসারের কোনো সমস্যা সৃষ্টি হলে তা দ্রুতই তালাকের দিকে ধাবিত হয়। যা কখনোই গ্রহনযোগ্য নয়।

আর তাই এই কলামে অবশ্যই স্বামী স্ত্রীকে তালাক প্রদানের ক্ষমতা দিবে। তবে এক্ষেত্রে বেশ কিছু শর্ত অবশ্যই যুক্ত করে দিতে হবে। যাতে করে স্ত্রীর যদি কোনো কারণে স্বামীর সমস্যার কারণে সংসার করতে না চায় তাহলে সে যেন স্বামী থেকে নিষ্কৃতি পায়। আর আমাদের বর্তমান সমাজের কারণে এই ধারাটি নারীদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

কিন্তু এই ধারাটি নারীদের রক্ষার জন্য করা হলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে স্ত্রীরা এর অপব্যবহার করে থাকে। যা তাদের লাভের চেয়ে ক্ষতিই হয় বেশী। তাই তালাক দেওয়ার ক্ষমতা প্রদানের আগে বেশ কিছু শর্ত অবশ্যই উল্লেখ করতে হবে। যা কাজীরা সহজে লিখে না। বা তারা এইসব বিষয়ে কথা বলতে চায় না। তাই যে করেই হোক এই শর্ত গুলো অবশ্যই কাবিননামায় উল্লেখ করতে হবে।

  • প্রথমত স্বামী তার স্ত্রীকে সর্বোচ্চ এক তালাকে বায়েন গ্রহণের ক্ষমতা দিবেন। আর এই এক তালাক গ্রহণের কারণে বিয়ে ভেঙে যায় না। কিন্তু কোনো কারণে তিন তালাক গ্রহণের কথা উল্লেখ থাকলে এই বিয়ে স্ত্রী চাইলেই একবারেই ভেঙ্গে দিতে পারেন।

তাই এক তালাক পর্যন্ত স্ত্রীকে ক্ষমতা দেওয়া। আর স্ত্রী এই এক তালাকের ক্ষমতা নিয়ে খুব সহজেই তার অথবা তাদের উভয়ের অভিভাবকদের নিয়ে যেকোনো শালিস বৈঠক করতে পারেন। আর এই বৈঠকের মাধ্যমে কোনো সমাধান না হলে স্ত্রী চাইলে বিয়ে ভেঙ্গে দিতে পারেন।

  • দ্বিতীয়ত তালাক প্রদানের ক্ষমতা ব্যবহার করতে হলে অবশ্যই দুজন অভিভাবকদের পরামর্শ এবং অনুমতির শর্তারোপ করা। অর্থাৎ স্ত্রীর একক সিদ্ধান্তে তালাক কখনোই কার্যকর হবে না। যতক্ষণ না তার অভিভাবকও এই তালাকের পক্ষে সম্মতি না দেয়। এতে করে সন্তান ভুল করলেও তার অভিভাবকগণ তাকে বুঝিয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করবে। 
  • তৃতীয়ত গৎবাঁধা শর্তে তালাকের অনুমতি প্রদান না করা। অর্থাৎ তালাক দিতে হলে কিছু শর্ত অবশ্যই যুক্ত করতে হবে যে শর্তের উপর ভিত্তি করে স্ত্রী তালাক নিতে পারবেন। বা স্বামী যেসব শর্ত পূরণ না করলে কিংবা ভঙ্গ করলে স্ত্রী তালাক নিতে পারবেন। এইসব শর্ত কোনো অবস্থাতেই সচারচর গৎবাঁধা যেসব শর্ত কাজীরা দিয়ে থাকেন তা হবে না।

এইক্ষেত্রে যেভাবে শর্তগুলো দেওয়া উচিত তা হলো, স্বামী যদি বিবাহের পর নিরুদ্দেশ হয়ে যায়। যা তার পরিবারও জানে না। তাহলে স্ত্রী এক তালাকের সুবিধা নিতে পারবেন। অথবা সুনির্দিষ্ট শরিয়ত সম্মত কারণ ছাড়াই স্ত্রীর উপর অমানুষিক নির্যাতন করা হলে স্ত্রী তালাক নিতে পারবেন। কিংবা স্বামী যদি স্ত্রীর স্বাভাবিক ভরণপোষণ দিতে অসমর্থ হলে বা দিতে না চাইলে স্ত্রী তালাক নিতে পারবেন ইত্যাদি।

উপরোক্ত শর্ত সমূহ যুক্ত করে তবেই স্ত্রীকে এক তালাক গ্রহণের অনুমতি দেওয়া যেতে পারে। এইসব শর্ত ছাড়া কোনো ভাবেই তালাকের অনুমতি দেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ হবে না।

কাবিননামা পূরণের সঠিক পদ্ধতি 

আমাদের সংসার গুলো যাতে সুন্দরভাবে টিকে থাকে তার জন্য কাবিননামার ধারাগুলো ভালোভাবে বুঝে শুনে লেখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রে কখনোই কোনো গাফিলতি করা যাবে না। কেননা ভুলভাল শর্তের কারণে কিংবা শর্তহীনের কারণে অনেক স্ত্রীই নিজেদের জীবনের কঠিনতম সিদ্ধান্ত নিতে তাড়াহুড়ো করে ভুল করে ফেলে। তাই কাবিননামা আমাদের সঠিক পদ্ধতিতে পূরণ করতে হবে।

  • ১৭ নং কলামের শর্তগুলো স্বামী স্ত্রীসহ তাদের অভিভাবকদের উভয়ের সম্মতিতে লিখা। 
  • ১৮ নং কলামে স্ত্রীকে সর্বোচ্চ এক তালাকে বায়েন গ্রহণের ক্ষমতা দেওয়া ।
  • একইসাথে এই ক্ষমতা বাস্তবায়ন অবশ্যই  স্ত্রী তার দুইজন অভিভাবকের  অনুমতি সাপেক্ষে হওয়া।
  • স্ত্রীর তালাক গ্রহণের ক্ষমতাটি সুস্পষ্ট ও সুচিন্তিত শর্তের উপরে হওয়া। 
  • কাবিননামার যাবতীয় ধারা জেনেবুঝে তারপরই বরের কাবিননামায় স্বাক্ষর করা।
কাবিননামার ১৮ নং কলাম
কাবিননামা লেখার নিয়ম: বিয়ের আগে কাবিননামার যে ধারা সম্পর্কে জানা জরুরি!

কাবিননামা লেখার নিয়ম 

এপর্যায়ে আমরা কাবিননামা লেখার নিয়ম জানবো। বিশেষ করে কাবিননামার ১৭, ১৮ ও ১৯ এই তিন ধারায় কী লিখতে হবে সেই বিষয়ে আলোচনা করব—

কাবিননামার ১৭ নং অনুচ্ছেদে কী লিখতে হবে?

১৭ নাম্বার ধারাতে রয়েছে, “বিশেষ শর্তাদি থাকিলে তাহা: …।” স্ত্রীর প্রতি আপনার কোনো শর্ত বা বাধ্যবাধকতা থাকলে এখানে তা লিখবেন। কেউ যদি চাই তাহলে নিম্নরূপ লিখতে পারেন— 
“দাম্পত্য সম্পর্ক থাকাকালীন স্বামী ভরণপোষণ দিতে ব্যর্থ না হওয়া পর্যন্ত বিনা লিখিত অনুমতিতে স্ত্রী কোনোরকম চাকরি/ব্যবসা বা কর্মজীবনে যোগদান করতে পারবেনা। স্বামী ইসলামি শরিয়াহ মোতাবেক একাধিক বিয়ে করলে স্ত্রীর সম্পূর্ণ সম্মতি থাকবে এবং কোনোরকম সমস্যা সৃষ্টি করতে পারবেনা এবং কোনো কৈফিয়ত চাইবে না।”?

সম্পূর্ণ আপনার মতাদর্শের উপর নির্ভর করবে এখানে কোনো শর্ত দিবেন কি না এবং দিলে তা কী কী।

কাবিননামার ১৮ নং কলাম লেখার সঠিক নিয়ম কী?

অধিকাংশ মানুষ কাবিননামার ১৮ নং ধারা পূরণে ভুল করে। ১৮ নং ধারাটি হলো, “স্বামী স্ত্রীকে তালাক প্রদানের ক্ষমতা অর্পণ করিয়াছে কি না? করিয়া থাকিলে কি কি শর্তে: …।” প্রায় সকল বিবাহে কাজী কর্তৃক আবার কখনোবা কনে পক্ষ থেকেই এখানে হ্যাঁ লেখা হয়ে থাকে। এখানে সরাসরি হ্যাঁ লিখলে পুরুষের সাথে অন্যায় করা হবে, তদ্রুপ না লিখলে আবার নারীর প্রতিও অবিচার করা হবে। 
তাই এভাবে লেখা যেতে পারে: “স্বামী নূন্যতম পাঁচ বছর নিরুদ্দেশ থাকিলে/যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাইলে/নির্যাতনের মাধ্যমে স্ত্রীর কোনো অঙ্গহানি করিলে/সম্পূর্ণরুপে পুরুষত্বহীন হইয়া পড়িলে এবং সে অবস্থায় বছরাধিককাল গত হইলে/টানা তিন বছর কোন রকমের ভরণ পোষণ দেয়া হইতে বিরত থাকিলে/নূন্যতম চারজন ন্যায়পরায়ণ ধার্মিক প্রত্যক্ষদর্শীর মাধ্যমে অকাট্যভাবে ব্যাভিচারী প্রমাণ হইলে স্ত্রী এক তালাকে রজঈ গ্রহণের অধিকার পাইবে। কোনো অবস্থাতেই সে এক তালাকে রজঈর অতিরিক্ত গ্রহনের সুযোগ পাইবেনা।”?

নিকাহনামার ১৯ নং ধারায় কী লেখা যেতে পারে?

কাবিননামার ১৯ নং ধারায় বলা হচ্ছে, “স্বামীর তালাক প্রদানের অধিকার কোন প্রকারে খর্ব হইয়াছে কি না?” নিম্নোক্ত ভাষায় নিকাহনামার এই ধারাটি পূরণ করা যেতে পারে—
“স্ত্রীকে তালাক গ্রহণের সুযোগ প্রদানকে শুধুমাত্র পূর্বোক্ত আঠারো নং অনুচ্ছেদে উল্লিখিত শর্তাদির সাথে নির্দিষ্টকরণের মাধ্যমে স্বামীর তালাক প্রদানের অধিকার খর্ব হয়নি।”?

মুসলিম বিবাহ ও তালাক নিবন্ধন ফি
মুসলিম বিবাহ ও তালাক নিবন্ধন ফি

শেষকথা 

আমরা এই আলোচনার মাধ্যমে এটা স্পষ্ট বুঝতে পারলাম যে, বিয়ের ক্ষে‌ত্রে কাবিননামা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। যে বিষয়টি বিয়ের আগে আমরা গুরুত্ব না দিলে বিয়ে পরবর্তী জীবনে আমাদের অবশ্যই আফসোস করতে হবে। তাই বিয়ের আগে আমাদের অবশ্যই কাবিননামা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হবে। এবং এইসব খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে আগে থাকতেই উভয় পরিবার একমত হয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

যাতে করে বিয়ে পরবর্তী জীবনে কোনো ঝুটঝামেলা আসলে তা উভয়ের সম্মতিতে সহজে সমাধান করা যায়। তাই আসুন বিয়ের আগেই বিয়ের শর্ত সম্পর্কে জানার চেষ্টা করি এবং সুখী সমৃদ্ধ সংসার জীবন গঠন করি। 

এই ছিল আজকের নিবেদন। সমাজ সচেতনতার জন্য অন্যদের সাথেও শেয়ার করুন। 

Share this article

Content Writer
Lives in Chattogram, Bangladesh
জীবিকার প্রয়োজনে একসময় প্রবাসী ছিলাম। প্রবাসের সেই কঠিন সময়ে লেখেলেখির হাতেখড়ি। গল্প, কবিতা, সাহিত্যের পাশাপাশি প্রবাসী বাংলা পত্রিকায়ও নিয়মিত কলাম লিখছি। প্রবাসের সেই চাকচিক্যের মায়া ত্যাগ করে মানুষের ভালোবাসার টানে দেশে এখন স্থায়ী বসবাস।
Comments
guest
0 Comments
Inline Feedbacks
View all comments

Related articles

পিল খাওয়ার নিয়ম

জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল খাওয়ার নিয়ম: পিল খাওয়ার সঠিক নিয়ম জেনে পিল খাচ্ছেন তো!

জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল খাওয়ার নিয়ম না জেনে নিজের খেয়াল খুশি মতো সাধারণ জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল বা ইমার্জেন্সি পিল খেলে হতে পারে নানাবিধ সমস্যা। এই পোস্টের মাধ্যমে পিল বা জন্মনিরোধক বড়ি খাওয়ার সঠিক নিয়ম জানতে পারবেন।

English blog

১. নিকাহনামার ১৭ নং ধারাটির লিখিতব্য: Mahdin Habib, Aid for Men. 

২. কাবিননামার ১৮ ও ১৯ নং ধারার লিখিতব্য: Affan Bin Sharfuddin, Hanafi Fiqh. 

ক্যাটাগরি

অনুসন্ধান করুন

সঠিক কিওয়ার্ড লিখে খুঁজে নিন আপনার দরকারি পোস্টটি!

Share this page
কাবিননামা লেখার নিয়ম

কাবিননামা লেখার নিয়ম: বিয়ের আগে কাবিননামার যে ধারা সম্পর্কে জানা জরুরি!

https://www.studykoro.com/how-to-write-kabinnama/

Report this book

Let us know if you notice any incorrect information about this PDF book. Also, please let us know if the given PDF file is banned for sharing; we will remove it as soon as possible. 

User Profile Picture

YourName