Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

ডিভোর্স কেন বাড়ছে? ডিভোর্স বা বিবাহবিচ্ছেদ কমাতে ৮টি উপায়

Last updated on April 12th, 2024

ডিভোর্স বা বিবাহবিচ্ছেদ বন্ধে করণীয়

বর্তমান সময়ে আমাদের আশেপাশে বিপুল পরিমাণে বিবাহবিচ্ছেদের ঘটনা ঘটছে। আমাদের পরিবার, আত্মীয়স্বজন কিংবা পরিচিত জনদের মধ্যে এমন অন্তত একটা ঘটনা রয়েছে, যা আমাদের চোখে পড়বেই।

একটা সময় ছিল তালাক, ডিভোর্স— এই শব্দগুলো আমরা কেবল নাটক সিনেমাতে দেখতে পেতাম। এগুলো যে বাস্তব জীবনেও ঘটে, তা আমাদের অনেকেরই জানা ছিল না। অথচ আজ একটি অন্যতম সামাজিক ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে বিবাহবিচ্ছেদ।

বিবাহবিচ্ছেদের ঘটনা কেন এত বেশি ঘটছে?

বাংলাদেশে ডিভোর্সের হার দিনকে দিন বাড়ার পেছনে যেমন বিয়ে পরবর্তী অনেক কারণ রয়েছে, ঠিক তেমনি বিবাহোত্তর বা বিবাহ পূর্ব নানা কারণও আছে। নিচে সেগুলো উল্লেখ করা হলো।

বিবাহবিচ্ছেদের বিবাহোত্তর কারণ

পরিবারের অসম্পৃক্ততা: একটি বাড়ি তোলার আগে প্রথমেই ভিত্তিটা মজবুত করে নিতে হয়। নইলে সামান্য ভূকম্পনে বাড়ির দেয়ালে ফাটল দেখা দেয়। তেমনি, একটি সম্পর্ককে টিকিয়ে রাখতে হলে সম্পর্কের শুরুটা হতে হবে মজবুত ভিত্তিতে।

যে বৈবাহিক সম্পর্ক গড়ে ওঠার পেছনে পরিবারের সম্পৃক্ততা থাকে না, সেই সম্পর্ক অতি নাজুক হয়। সেই সম্পর্কে কেবল মায়া থাকে, আর মায়ার স্থায়ীত্ব অতি সীমিত।

বিবাহ কেবল দুটো মানুষকে কাছাকাছি আনে না, দুটো পরিবারকেও কাছাকাছি নিয়ে আসে। এটি কেবল ব্যক্তিগত নয়, বরং একটি সামাজিক আচার অনুষ্ঠান। বিয়ের উদ্দেশ্য কেবল জৈবিক চাহিদার স্বীকৃতি প্রদান নয়, বিয়ের মাধ্যমে প্রজন্ম রক্ষা করা, আর নতুন প্রজন্মের মাধ্যমে সামাজিক প্রথা রক্ষা করাই হচ্ছে বিয়ের নিগূঢ় উদ্দেশ্য।

আমাদের ইসলাম ধর্মে অভিভাবক ছাড়া কোনো মেয়ের বিয়েকে অস্বীকার করা হয়েছে। সহিহ হাদিসে আমরা পাই, নবী করিম (স) বলেছেনঃ

যে নারীকে তার অভিভাবক বিবাহ দেয়নি তার বিবাহ বাতিল। [তথ্যসূত্র?] 

বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ককে যেখানে ইসলাম নিষিদ্ধ করেছে, আমরা সেই কাজটাই করছি বিনা দ্বিধায়। এর চেয়েও গর্হিত কাজ করছি পরিবারকে না জানিয়ে নিজেরা বিয়ে করে ফেলে। কোর্ট ম্যারেজের মাধ্যমে হালাল সম্পর্কের সার্টিফিকেট নিয়ে নিচ্ছি, এমনকি সেই সার্টিফিকেটের বলে অনেকে স্বামী-স্ত্রীর মত বসবাসও করছেন। অথচ নবীজি (স)-এর উপরোক্ত হাদিসে স্পষ্ট বর্ণিত আছে যে, “যে নারীকে তার অভিভাবক বিবাহ দেয়নি তার বিবাহ বাতিল।”

এরকম সম্পর্ক ভাঙ্গনের দ্বারপ্রান্তে চলে এলে মাথার উপর অভিভাবক বলতে কেউ থাকে না, যার ফলে নিশ্চিত বিচ্ছেদ ঘটে।

কেমন ছেলে বিয়ে করা উচিত
ডিভোর্স কেন বাড়ছে? ডিভোর্স বা বিবাহবিচ্ছেদ কমাতে ৮টি উপায়

দেখুন: কেমন ছেলে বিয়ে করা উচিত

অভিভাবকদের ভুল সিদ্ধান্ত

বিবাহের জন্য উপযুক্ত পাত্রপাত্রী নির্বাচনের মাপকাঠিটা আমাদের সমাজে সঠিক নয়। পার্থিব জীবনের বিত্তবৈভবের ভিত্তিতেই পাত্রপাত্রীর যোগ্যতা পরিমাপ করা হয়, যা ঠিক নয়।

সবচেয়ে বেশি যৌতুক আদায় করা যাবে এরকম পরিবারের খোঁজ করেন অনেকে। সভ্য সমাজে একে এখন যৌতুক বলে না যদিও, বলা হয় উপহার; উপঢৌকন।

সম্পদশালী বাবার একমাত্র মেয়ে হলে তো কথাই নেই। মেয়ের চালচলন যেমনই হোক, এই অঢেল সম্পত্তির মালিক তো এক সময় মেয়ের জামাই-ই হবে। সুতরাং ছেলের ভবিষ্যত নিশ্চিত।

পাত্রী পক্ষদের দৃষ্টিভঙ্গিও এরকম সংকীর্ণ (অথবা অনেকের ভাষায় দূরদৃষ্টি সম্পন্ন) হয়ে থাকে। ছেলে সুদী ব্যবসায়ের সাথে জড়িত কিনা, হালাল উপার্জন আছে কিনা, সর্বোপরি ছেলে দ্বীনদার চরিত্রবান কিনা সেগুলো মূল ফ্যাক্টর নয়। ছেলে ধনী, পরিবার প্রভাবশালী; সুতরাং মেয়ে আমাদের সুখেই থাকবে।

পাত্র পাত্রী নির্বাচনের ক্ষেত্রে এখন এগুলোই মূল বিবেচ্য বিষয় হয়ে দাঁড়ায় বিধায় বিয়ের পরে মানিয়ে চলাটা সহজ হয় না। এবং সেই সম্পর্ক শুরু থেকেই ভঙ্গুর ভিত্তিতে স্থাপিত হয়।

ডিভোর্স কেন বাড়ছে
ডিভোর্স কেন বাড়ছে? ডিভোর্স বা বিবাহবিচ্ছেদ কমাতে ৮টি উপায়

ডিভোর্সের বিবাহ পরবর্তী কারণ

সমঝোতার অভাব: মানুষের চরিত্রের বিভিন্ন দিক রয়েছে। একটা চুপচাপ, নম্র-ভদ্র স্বভাবের মানুষও মাঝে মাঝে ভীষণ রেগে যেতে পারে। আবার সব সময় যে মানুষটা মারমুখী মেজাজে থাকে, মাঝেমাঝে সেও কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে চেয়ে থাকতে পারে। ভালো-মন্দ উভয় বৈশিষ্ট্য নিয়েই মানুষের চারিত্রিক গঠন।

আমরা যখন কারো সাথে আবেগঘন সম্পর্কে জড়াই, তখন তার ভালো গুণগুলোই কেবল আমাদের চোখে ধরা দেয়। আর খারাপ গুণগুলো আমরা দেখেও না দেখার ভান করি।

ছেলেটা মদ্যপান করে?
ছেলেটা বদমেজাজি?
বন্ধুদের সাথে গালমন্দ করে?
মেয়েটা সোশিয়াল মিডিয়ায় একটু বেশিই সময় কাটায়?
মেয়েটা মিথ্যে কথা বলে?
আমার ভালো লাগা মন্দ লাগার প্রতি মেয়েটা উদাসীন?

ব্যাপার না; বিয়ের পর ওকে এত ভালোবাসব যে সব ঠিক হয়ে যাবে। এরকম দুই একটা ব্যাপার নিয়ে সম্পর্ক ভেঙ্গে ফেলব? প্রশ্নই আসে না।

কিন্তু বিয়ের পর ছোট ছোট দোষত্রুটিও আমাদের চোখে বড় হয়ে দেখা দেয়। হাজবেন্ড সারাদিন কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকেন; স্ত্রীকে সময় দিতে পারেন না। জন্মদিন; বিবাহবার্ষিকী কিছুই মনে থাকে না তার।

ওদিকে অফিস থেকে ওয়াইফ আজ বাসায় ফিরতে দেরি করছে। অফিস ছুটির পর কলিগরা মিলে পাশের রেস্তোরাঁয় খেতে গিয়েছিল। এদিকে বাসায় ছোট্ট ছেলেটার জ্বর এসেছে, মায়ের খবর নেই।

আমরা কিন্তু চাইলেই এই ভুলগুলো এড়িয়ে যেতে পারি‌। অসংখ্য বার ঝগড়াঝাঁটি মারামারির পরেও দৃঢ় প্রত্যয়ের সাথে প্রেমের সম্পর্কটিকে আমরা টিকিয়ে রাখতে চাই। অথচ সামান্য ভুলের জন্য কেবলমাত্র সমঝোতার অভাবে একটি বৈবাহিক সম্পর্ক ভেঙ্গে ফেলি অতি সহজেই।

উদাসীন মনোভাব

একে অপরের প্রতি উদাসীন মনোভাব পোষণ করলে নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়ার অভাব দেখা দেয়। একটি মেয়ের জীবনে তার স্বামী কিংবা একটি ছেলের জীবনে তার স্ত্রীই হতে পারে সবচেয়ে কাছের বন্ধু। পবিত্র আল-কোরআনে আল্লাহ তায়ালা স্বামী-স্ত্রীকে একে অপরের বস্ত্র বলে উল্লেখ করেন।

আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ

هُنَّ لِبَاسٌۭ لَّكُمْ وَأَنتُمْ لِبَاسٌۭ لَّهُنَّ ۗ

অর্থাৎ, তারা আপনার জন্য পোশাক এবং আপনি তাদের জন্য পোশাক। (আয়াত সূত্র?)

বস্ত্র যেমন আমাদের শরীরের সবচেয়ে কাছে থাকে, স্বামী-স্ত্রীও পরস্পরের সবচেয়ে কাছের মানুষ হয়ে থাকেন।

কিন্তু এই বিষয়ে উদাসীন মনোভাব দেখালে, স্বামী-স্ত্রীর চাওয়া পাওয়ার প্রতি গুরুত্বারোপ না করে অন্য সব বিষয়কে প্রাধান্য দিলে ভুল বুঝাবুঝি তৈরি হওয়াটা এক প্রকার অনিবার্য।

চাকরিজীবনের সমস্যা, ব্যবসায়িক জটিলতা, পারিবারিক জীবনে টানাপোড়েন এগুলো নিয়ে আমরা আমাদের বন্ধুদের সাথে যতটা সাবলীল ভাবে আলোচনা করি, নিজের জীবন সঙ্গিনীর সাথে তার ছিটেফোঁটাও হয়ত করা হয় না। অথচ দিনশেষে আমাদেরকে একসাথে একই বিছানায় ঘুমাতে হয়।

অপরদিকে স্বামীর কোন জিনিসটা পছন্দ, কোনটা অপছন্দ সেটা নিয়ে ভাবার সময় পান না অনেকে। সোসিয়াল মিডিয়ায় সময় কাটাতে এতটাই ব্যস্ত হয়ে পড়েন যে সংসারের সামান্য কাজটুকু করা হয়ে উঠে না। দিনশেষে স্বামী ঘরে ফিরে এলে সন্তুষ্ট হতে পারেন না‌। ঘর থাকে অগোছালো, রান্নায় থাকে না স্বাদ। একান্তে বসে ভালোবাসার দুটো কথা বলার মানসিকতাটা আর থাকে না।

এভাবেই তৈরি হয় দূরত্ব।

সন্দেহপ্রবণতা

সন্দেহপ্রবণতা দাম্পত্য জীবনের আরেক অশান্তির নাম। এটি ঘুণপোকার মত সম্পর্ককে অন্তঃসারশূন্য করে ফেলে। সন্দেহপ্রবণতা এমনই এক ব্যাধি, যার কোনো যৌক্তিক কারণ থাকে না।

একটা মানুষ কারো সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্কে আবদ্ধ হওয়া মানে সে তার কেনা দাস হয়ে যায় না। মানুষ জন্মগতভাবে একটা স্বাধীনচেতা মনোভাব নিয়ে বেড়ে উঠে। প্রতিটা মানুষের মধ্যেই ন্যুনতম একটা স্বাধীনতা বোধ রয়েছে। প্রতিটা মানুষেরই কিছু ব্যাপার থাকে, যা একান্ত ব্যক্তিগত। সেখানে কারো হস্তক্ষেপ করাটা অবাঞ্চনীয়। সে আপনার স্ত্রী অথবা সে আপনার স্বামী মানে এই নয় যে, দিনের শুরু থেকে শেষ অবধি ফেলা প্রতিটা নিঃশ্বাসের হিসাব তার আপনাকে দিতে হবে।

এই অশান্তি যখন সহ্যের সীমা অতিক্রম করে যায়, তখনই ঘটে বিচ্ছেদ।

অন্যের সাথে তুলনা

প্রতিটা মানুষই স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যের অধিকারী। কেউ আছে যে সব সময়ই থাকে হাসি খুশি, শৌখিন। আবার কেউ কেউ থাকে অন্তর্মুখী স্বভাবের; আবেগ ভালোবাসা মুখে প্রকাশ করতে পারে না।

আমরা অনেকেই অন্যদের সাথে নিজেদের তুলনা করে থাকি। অন্যরা কীভাবে জীবন অতিবাহিত করছে সেটা নিয়ে আমাদের ভাবনার অন্ত নেই। ব্যক্তিগতভাবে চেনা জানা নেই, অথচ স্যোশাল মিডিয়ায় সারাদিন বসে বসে তাদের ভ্লগ দেখে সময় কাটাই। ভাবি ইশ কী সুন্দর কাপল! 

মাসে মাসে বেড়াতে যাওয়া, সপ্তায় সপ্তায় রেস্তোরাঁয় খেতে যাওয়া, মাঝেমধ্যে একে অপরকে উপহার দিয়ে চমকে দেয়া, অফিস থেকে আসার সময় প্রতিদিন ওয়াইফের জন্য একটি লাল গোলাপ নিয়ে আসা— এগুলোই হচ্ছে আসল ভালোবাসা। ভ্লগে তো এগুলোই দেখা যায়।

কিন্তু বাস্তবতার সাথে এসবের অমিল দেখতে পেলেই শুরু হয় মন কষাকষি। আমার স্বামী তো আমাকে ভালোই বাসে না— এরকম একটি মনোভাব তৈরি হয় তখন।

অপরদিকে স্বামী ভাবে, সুমন ভাইয়ের বউয়ের হাতের গরুর মাংসের ভূনা খেয়ে মনটা ভরে গেল। আর আমার বউ তো ভাতটাও ঠিক মত রান্না করতে পারে না। কপালটাই খারাপ আমার।

অন্যের সাথে যখন এই তুলনাটা চলে আসবে, তখনই তৈরি হবে মনমালিন্য। এক সময় ডিভোর্সের মত অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে।

তৃতীয় ব্যক্তির প্রাধান্য

দাম্পত্য জীবনের সমস্যার জন্যে তৃতীয় ব্যক্তির মতামতকে মৌলিক প্রাধান্য দিলে বিচ্ছেদ আবশ্যক।

সঙ্গীর প্রতি অসন্তোষ থাকতেই পারে। মনমালিন্য হতেই পারে। কিন্তু এই ব্যাপারগুলো নিজেদের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে তৃতীয় ব্যক্তিকে টেনে আনাটা কোনো বুদ্ধিমানের কাজ নয়।

একটা মানুষ নিজের মনের কষ্টগুলো হয়ত সরল মনে তার বান্ধবীকে বলতে পারে। কিন্তু যাকে সে কথাগুলো বলছে, সে যে তার ভালো ছাড়া মন্দ চায় না, তার কী নিশ্চয়তা আছে?

কী বললি, তোর স্বামী প্রতিদিন রাত এগারোটায় বাড়ি ফিরে?
বাড়ি ফিরেই খেয়েদেয়ে শুয়ে পড়ে?
তোকে একটুও সময় দেয় না?
আমি একশো ভাগ নিশ্চিত তোর জামাইর এফেয়ার আছে।

এই ধরনের মন্তব্যের আশা কেউই করে না। নিজের বিচার বিবেচনাকে পাশ কাটিয়ে এই মন্তব্যগুলোকে প্রাধান্য দিলেই তৈরি হয় দাম্পত্য কলহ। আর এখান থেকেই শুরু হয় বিচ্ছেদের পথ।

বিচ্ছেদকে ইতিবাচক ভাবে প্রচার করা

জনপ্রিয় ব্যক্তিত্বদের মাধ্যমে এই বিচ্ছেদ প্রথাটিকে রোমান্টিসাইজ করা বর্তমান সমাজে বিবাহবিচ্ছেদ বেড়ে যাওয়ার অন্যতম একটি বিবেচ্য কারণ।

জনপ্রিয় সেলিব্রিটি কিংবা যারা পাবলিক ফিগার রয়েছেন, তাদের মাধ্যমে ইদানিং ডিভোর্স (Divorce) কালচারটাকে যেভাবে প্রচার করা হচ্ছে, যেন ‘বিচ্ছেদ’ এটা কোনো বড় ব্যাপার নয়। স্বামী-স্ত্রীর মাঝে বনিবনা হচ্ছে না; তার একটাই সমাধান— তালাক।

আজ পর্যন্ত যতগুলো সেলিব্রিটির বিচ্ছেদ ঘটনা জনসমক্ষে এসেছে, তাদের প্রত্যেকের অভিন্ন একটি বক্তব্য হল, মতের অমিল হওয়াতে মিচ্যুয়ালি আমরা ডিভোর্স নিয়েছি। আমাদের কারো প্রতি কারো তেমন কোনো অভিযোগ নেই। জীবন থেকে আমরা দুজন দুটো ভিন্ন জিনিস চাই, সুতরাং সম্পর্কটা বিষাক্ত হওয়ার আগেই আমরা আলাদা হয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

অর্থাৎ মতের মিল না হওয়ার কেবল একটাই সমাধান— ডিভোর্স। আট-নয় বছরের বৈবাহিক সম্পর্ক মতের অমিল হলে কেবল বিচ্ছেদই শ্রেষ্ঠ সমাধান? বৈবাহিক সম্পর্ক এতটাই ঠুনকো হতে পারে?

এই জনপ্রিয় ব্যক্তিত্বদের দ্বারা বিচ্ছেদ প্রথাকে এভাবে রোমাঞ্চকর করার জন্যেই সমাজে ডিভোর্স এতখানি বেড়ে গেছে। এদের যারা ভক্তকুল রয়েছেন, তাদের উপর এর প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়ছে। সামান্য বনিবনার অভাবে বিচ্ছেদ ঘটছে। কোলে দুটো বাচ্চা থাকা সত্ত্বেও বিয়েটাকে টিকিয়ে রাখার মন মানসিকতা হারিয়ে যাচ্ছে।

Credit: LifeSpring Limited

কীভাবে ডিভোর্স বা বিবাহবিচ্ছেদ রোধ করা সম্ভব?

ডিভোর্স বা তালাকের হার কমাতে বিয়ের আগে এবং পরে কিছু পদক্ষেপ নেয়া জরুরী। নিচে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি বিষয় তুলে ধরা হলো।

ডিভোর্স বা তালাকের হার কমাতে বিবাহোত্তর ব্যবস্থা

অভিভাবকদের অনুমতি নিন: যদিও নবী করিম (স) যুবক ভাইদের বিয়ে করার জন্য উৎসাহ প্রদান করেছেন। (হাদিস পড়ুন?)

কিন্তু উক্ত হাদিসে নবীজি (স) একটি শর্ত যোগ করেছেন— “যে ব্যক্তির সামর্থ্য আছে, সে যেন বিয়ে করে নেয়…… আর যার সামর্থ্য নেই, সে যেন সওম পালন করে…।”

হাদিসের শেষ অংশটি দ্বারা বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ককে হারাম করা হয়েছে।

আজ একটি ছেলে বা একটি মেয়ে বিয়ের জন্য উপযুক্ত বা সমর্থ না হলেও প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ছে। অথচ নবীজির (স) স্পষ্ট বাণী, “যার বিয়ের সামর্থ নেই, সে যেন রোজা রাখে; অর্থাৎ ধৈর্য ধারণ করে।”

অথচ বিয়ের জন্য আমরা কতটুকু প্রস্তুত সেই দিকটা নিয়ে আমরা বিবেচনা না করে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে যাই আর আবেগের বশে দুম করে বিয়ে করে ফেলি কাউকে না জানিয়ে। এরপরই শুরু হয় বিপত্তি।

সুতরাং বিয়ের জন্য নিজেকে প্রথমে যোগ্য করে তুলুন। এরপর পরিবারের তত্ত্বাবধানে বিয়ে করুন।

এখানে রাসুলুল্লাহ (স) এর সাথে উম্মুল মুমিনীন হযরত খাদিজা (রা) এর বিবাহের ঘটনাটিকে আদর্শ হিসেবে নেয়া যায়। নবীজির (স) উত্তম চরিত্রে অভিভূত হয়ে খাদিজা (রা) তাকে বিয়ের প্রস্তাব দিলেন। তিনি নিজে গিয়ে নবীজিকে (স) আধুনিক পরিভাষায় যাকে বলে, ‘প্রপোজ’ করেননি। তিনি প্রস্তাবটি পাঠিয়েছিলেন তার বান্ধবী নাফিসা এর মাধ্যমে।

এরপর নবীজি কী করলেন? দৌড়ে গিয়ে বিয়ে করে ফেললেন?

না, তিনি প্রথমে চাচা আবু তালিবকে জানালেন পরামর্শের জন্য। এরপর তাঁর আরেক চাচা হযরত হামজা (রা) প্রস্তাব নিয়ে গেলেন হযরত খাদিজার (রা) বাবার কাছে।

এভাবেই পারিবারিক ভাবে বিয়েটি সম্পন্ন হল।

এখান থেকে শিক্ষা নিয়ে যে সম্পর্ক স্থাপন করা হবে, সেই সম্পর্কের স্থায়িত্ব নিশ্চিত।

যাচাই বাছাই করুন

বিয়ের জন্য পাত্রপাত্রী নির্বাচনের ক্ষেত্রে নবী করিম (স) চারটি জিনিস লক্ষ্য রাখতে বলেছেন; সম্পদ কতটুকু, বংশমর্যাদা কীরকম, বাহ্যিক সৌন্দর্য ও দীনদার নেককার কিনা (অর্থাৎ উত্তম চরিত্রের অধিকারী কিনা)।

এই চারটির মধ্যে প্রথম তিনটি গুণ থাক বা না থাক; চতুর্থ গুণের (অর্থাৎ দীনদার, চরিত্রবান কিনা) উপরই প্রাধান্য দিয়ে পাত্রপাত্রী নির্বাচন করতে বলেছেন। ছেলেমেয়ের মধ্যে প্রথম তিনটি গুণ রয়েছে ভালো, কিন্তু চতুর্থ গুণটি অনুপস্থিত; সেই ক্ষেত্রে নবীজি (স) চরম বিপদের সতর্কবাণী উচ্চারণ করেন। (হাদিস পড়ুন?)

অথচ অভিভাবকরা সেই দায়িত্ব কতটা সঠিকভাবে পালন করছেন সেই নিয়ে প্রশ্ন আছে। শুধুমাত্র বাহ্যিক জাঁকজমকতায় অভিভূত না হয়ে মানুষ হিসেবে পাত্রের চরিত্র কেমন, সমাজে পারিবারিক মর্যাদা কীরকম, পাড়া প্রতিবেশীর সাথে পাত্র ও পাত্রের পরিবারের সম্পর্ক কীরকম এসব বিষয়কে মৌলিক গুরুত্ব প্রদান করতে হবে।

কনের পরিবার হয়ত আর্থিকভাবে খুব একটা স্বচ্ছল না হতে পারে। কিন্তু খোঁজ নিয়ে হয়ত জানা গেল এরকম ফুলের মত পবিত্র মেয়ে আর হয় না। এই মেয়ে সংসারে আসলে আলোকিত করে তুলবে পুরো ঘর। পাত্রী হিসেবে এর চেয়ে বেশি কি আশা করা যায়?

বিয়ের আগে এগুলো ব্যাপারে যাচাই-বাছাই করে নিলে বিয়ের পর এ নিয়ে আর দ্বন্দ্ব সংঘাত তৈরি হয় না।

পাত্রী নির্বাচনে করণীয়
ডিভোর্স কেন বাড়ছে? ডিভোর্স বা বিবাহবিচ্ছেদ কমাতে ৮টি উপায়

দেখুন: কেমন মেয়ে বিয়ে করা উচিত

বিচ্ছেদ রোধে বিবাহ পরবর্তী সমাধান

আপন করে নিন: যৌথ পরিবারে যে সমস্যাটা প্রায়ই হয়, ছেলের বউকে কেউ নিজের মেয়ের মত আপন করে নিতে পারেন না। অপরদিকে শাশুড়িকেও আপন মায়ের মত শ্রদ্ধা করতে পারে না অনেকে।

বউ-শাশুড়ি হচ্ছে পরস্পরের দর্পণ। আজ আপনার অধীনে একটি মেয়ে আছে, সে তার পূর্ববর্তী জীবনটাকে বিসর্জন দিয়ে এসেছে নতুন সংসার গুছাতে। আজ আপনি তাকে মেয়ের মত ভালোবাসলে কাল সে আপনার এতদিনের গুছানো সংসারটাকে শক্ত হাতে আঁকড়ে ধরবে।

অন্যদিকে শাশুড়ির সাথে উত্তম আচরণের মাধ্যমেই সংসারে অনাবিল আনন্দ বয়ে আসবে। কারণ একদিন আপনাকে তাঁর জায়গাই নিতে হবে।

এরকম দুই পক্ষের সমান প্রচেষ্ঠা থাকলে বিচ্ছেদের কথা তো মাথায়ই আসার কথা নয়।

ভালোবাসার মুহূর্ত তৈরি করুন

মুহূর্ত এমনি এমনি আসে না, মুহূর্ত তৈরি করতে হয়। সপ্তাহে অন্তত একটি দিন প্রিয় মানুষের জন্য তুলে রাখুন। মাসের স্যালারি থেকে একটা অংশ তুলে রাখুন, যার মাধ্যমে বছরে অন্তত একবার দূরে কোথাও ঘুরে আসা যায়।

সকাল সকাল অফিসের জন্য তাড়া রয়েছে, তারই মাঝে দুষ্টুমিষ্টি দুই একটা খুনসুটি তো হতেই পারে। একসাথে কাটানো পুরোনো সুখস্মৃতি নিয়ে অবসর সময়ে আলোচনা করুন। বিয়ের আগে যেসব জায়গায় নিয়মিত ঘুরতে যেতেন, সেসব জায়গায় আরেকবার ঘুরতে যান; স্মৃতিগুলোকে পুনরুজ্জীবিত করুন।

মোট কথা, ছোট ছোট ব্যাপারগুলোতে ভালোবাসার মুহূর্ত খুঁজে নিন।

খোলামেলা আলোচনা করুন

জীবন কখনো সমান গতিপথে ধাবিত হয় না। জীবনে উত্থান-পতন থাকবেই। বিপদে আপদে সকল বিষয়ে আপনার সঙ্গীর সাথে আলোচনা করুন। কারণ একমাত্র তিনিই রয়েছেন, যিনি কখনো আপনাকে ভুল পরামর্শ দেবেন না। কারণ আপনার নাড়ি নক্ষত্রের সাথে পরিচয় রয়েছে কেবল তারই।

চাকরি সমস্যা, ব্যবসায়ে ভারি লোকসান— এগুলো বউকে বলে কী হবে? সে কী করবে?

সে হয়ত কিছুই করতে পারবে না। কিন্তু দুটো কথা বলে আপনার অশান্ত মনকে শান্ত করতে পারবে সে।

এটা কিন্তু আমার কথা নয়। পরম করুনাময় আল্লাহর স্বয়ং বাণীঃ

 خَلَقَ لَکُمۡ مِّنۡ اَنۡفُسِکُمۡ اَزۡوَاجًا لِّتَسۡکُنُوۡۤا اِلَیۡهَا 

অর্থাৎ, তিনি তোমাদের জন্য তোমাদের থেকেই স্ত্রীদের সৃষ্টি করেছেন, যাতে তোমরা তাদের কাছে প্রশান্তি পাও। (আয়াত সূত্র?)

ছাড় দিন

ভালোবাসার মানুষের উপর বিশ্বাস রাখুন। সারাক্ষণ জবাবদিহিতা নয়, বরং একে অপরকে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য স্পেস দিন।

পরস্পরের প্রতি যেকরম সৎ থাকাটা জরুরি, তেমনি পরস্পরের প্রতি বিশ্বাস রাখাটাও অতীব জরুরি।

আপনার হাতে তার ফেসবুক পাসওয়ার্ড থাকা মানে এই নয় যে প্রতিদিন আপনাকে গোয়েন্দার মত তার ইনবক্স চেক করতে হবে। অপ্রয়োজনে এই কাজটা করা থেকে বিরত থাকুন। দেখবেন সমস্যার অর্ধেক সমাধান এমনিতেই হয়ে গিয়েছে।

সরাসরি কথা বলুন

আপনার সঙ্গীর প্রতি কোনো অভিযোগ অনুযোগ থাকলে তার সাথে সরাসরি কথা বলুন, মনের ভেতর অভিমান পুষে রাখবেন না। প্রশ্নবিদ্ধ ব্যাপারগুলো সরাসরি প্রশ্ন করে জানার চেষ্টা করুন। নিজে নিজে অনুসন্ধান করতে যাবেন না। সমস্যা থাকলে দুজন বসে আলোচনা করে সমাধানে আসুন।

আর হ্যাঁ, সমাধান মানেই বিচ্ছেদ নয়— এটা মনে রাখবেন।

সন্তানের ভবিষ্যতের কথা ভাবুন

আপনি যখন প্যারেন্টস হবেন, তখন আপনার ব্যক্তিগত স্বার্থের চেয়েও প্রাধান্য দিতে হবে আপনার সন্তানের স্বার্থকে। সন্তান থাকা আর না থাকার মধ্যে মানুষের জীবনটা দুভাগে বিভক্ত। মা-বাবা নিজ স্বার্থকে বিসর্জন দিয়ে সন্তানকে লালনপালন করেন। সেই সন্তানের ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে হলেও যথাসম্ভব সম্পর্কটাকে রক্ষা করুন।

মনে রাখবেন, আপনাদের দাম্পত্য কলহের নিচে চাপা পড়ে সেই ছোট শিশুটা বিনা দোষেই শাস্তি পায়। আপনারা হয়ত ডিভোর্স লেটারে দুই সেকেন্ডে একটি সই করে মুক্তি পেয়ে যান। কিন্তু সেই নিষ্পাপ বাচ্চাটাকে আজীবন এর পরিণাম ভোগ করতে হয়।

পরিশেষ বক্তব্য

দিন দিন পশ্চিমা অপসংস্কৃতি আমাদের জীবনটাকে গ্রাস করে নিচ্ছে। প্রতিটি নাটক, সিনেমা,‌ ওয়েবসিরিজে এখন ডিভোর্স কালচারকে ফলাও করে প্রচার করা হচ্ছে। সেলিব্রিটিদের মাধ্যমে এর ইতিবাচক দিক তুলে ধরা হচ্ছে।

কিন্তু বিবাহবিচ্ছেদ, মিউচুয়াল সেপারেশন যা-ই বলি না কেন; এর কোনো ইতিবাচক দিক হতে পারে না।

দাম্পত্য জীবনটাকে উপভোগ করতে শিখুন। জীবন খুব বেশি লম্বা নয়।

Share this article

Expert Team
Lives in Bangladesh
এডিটোরিয়াল স্টাফ হলো স্টাডিকরো’র একটি কনটেন্ট রাইটিং এক্সপার্ট টিম। যারা কিনা এই শিক্ষণীয় প্লাটফর্মকে আরো বেশি তথ্য সমৃদ্ধ করতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
Comments
guest
10 Comments
Inline Feedbacks
View all comments
মুনকাসির হোসেন
মুনকাসির হোসেন

খুব ভাল লাগলো লিখাটা। বাস্তবে আমরা এইভাবে চলতে পারলে পরিবারে কোন সমস্যাই থাকার কথা না। বাস্তব ভিন্ন হলেও লিখার মাধ্যমে যে কথা গুলো তুলে ধরা হয়েছে তাতে নতুন কিছু আইডিয়া মাথায় থাকলো। যা হয়ত পারিবারিক জীবনে কাজে লাগানো যাবে। আপনাকে ধন্যবাদ সুন্দর লিখার জন্য। এই রকম লিখা হয়ত সবাই পড়বে না। কিন্তু একজন মানুষেরও যদি কাজে লাগে তবেই তো রাইটার হিসেবে এবং মানুষ হিসেবে আপনার জীবন সার্থক। এই রকম লিখা আরও চাই।

StudyKoro
Admin
StudyKoro

মুনকাসির হোসেন, আপনার উৎসাহ মূলক মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

শাহিনুর ইসলাম ফেরদৌস
শাহিনুর ইসলাম ফেরদৌস

লিখাটা ভালো লেগেছে। দাম্পত্য জীবনে মনোমালিন্য এবং ভুল বুঝাবুঝি হলে সন্তানের কথা ভেবে একে-অপরকে ছাড় দিয়ে হলেও বিচ্ছেদের পথ পরিহার করা উচিত।

StudyKoro
Admin
StudyKoro

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

টেকনো রিয়াদ
টেকনো রিয়াদ

লিখাটা অসম্ভব ভালো লেগেছে 🥰

StudyKoro
Admin
StudyKoro

ধন্যবাদ।

Erabi Jannat Jhorna
Erabi Jannat Jhorna

লেখক খুব ভালো বলেছেন। স্বামী-স্ত্রী উভয়ের মধ্যে যে ছোট ছোট ভুলগুলোর কারনে ঝগড়া বা মনোমালিন্য তৈরি হয় সেগুলো তারা নিজেরা চাইলেই একটু চেষ্টা আর ধৈর্যের মাধ্যমে সংশোধন করতে পারে। আমরা যদি একে অন্যের প্রতি এটুকু স্যাক্রিফাইস এর মনোভাব না রাখতে পারি তাহলে আমাদের সংসার নামক মজবুত ভিতটা কিভাবে তৈরি করবো?

StudyKoro
Admin
StudyKoro

জি, ঠিক বলেছেন। সবাই এভাবে চিন্তা করলে আজ সমাজের এমন দশা হতো না।

ধন্যবাদ আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

Moyna Akter
Moyna Akter

লেখাটা ভালো হয়েছে। বর্তমানে একদম তুচ্ছ কারনেই অনেক ডিভোর্স হচ্ছে৷ দুইজন মানুষ একসাথে থাকলে একটু মনমালিন্য হবেই মাঝে মাঝে,তাই বলে ডিভোর্স দেওয়ার মতো একটা জঘন্য পদক্ষেপ নেওয়া একদমই উচিতনা।

StudyKoro
Admin
StudyKoro
Reply to  Moyna Akter

জি, ঠিক বলেছেন।

Related articles

পিল খাওয়ার নিয়ম

জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল খাওয়ার নিয়ম: পিল খাওয়ার সঠিক নিয়ম জেনে পিল খাচ্ছেন তো!

জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল খাওয়ার নিয়ম না জেনে নিজের খেয়াল খুশি মতো সাধারণ জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল বা ইমার্জেন্সি পিল খেলে হতে পারে নানাবিধ সমস্যা। এই পোস্টের মাধ্যমে পিল বা জন্মনিরোধক বড়ি খাওয়ার সঠিক নিয়ম জানতে পারবেন।

English blog

ক্যাটাগরি

অনুসন্ধান করুন

সঠিক কিওয়ার্ড লিখে খুঁজে নিন আপনার দরকারি পোস্টটি!

Share this page
ডিভোর্স বা বিবাহবিচ্ছেদ বন্ধে করণীয়

ডিভোর্স কেন বাড়ছে? ডিভোর্স বা বিবাহবিচ্ছেদ কমাতে ৮টি উপায়

https://www.studykoro.com/how-to-control-divorce-rate/

Report this book

Let us know if you notice any incorrect information about this PDF book. Also, please let us know if the given PDF file is banned for sharing; we will remove it as soon as possible. 

User Profile Picture

YourName