Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

অধ্যবসায় রচনা: সহজ ভাষায় পয়েন্ট আকারে

Last updated on April 12th, 2024

অধ্যবসায় রচনা ২০ পয়েন্ট

অধ্যবসায় রচনাটি এসএসসি সহ বিভিন্ন শ্রেণির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই শিক্ষার্থীদের জন্য এখানে অধ্যবসায় রচনাটি দেয়া হলো। এখানে অধ্যবসায় রচনার ২০ এর অধিক পয়েন্ট আছে। অব্যবসায় রচনাটি আমরা বিভিন্ন জায়গা থেকে সংগ্রহ করেছি।

প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুদের জন্য নিচে সহজ ভাষায় পয়েন্ট আকারে রচনাটি দেওয়া হলো।

আপনার পরীক্ষার জন্য গুরুত্বপূর্ণ রচনা সমগ্র নিয়ে আমাদের রচনা বিভাগটি সাজানো হয়েছে।

Table of Contents

অধ্যবসায় রচনা
অধ্যবসায় রচনা

অধ্যবসায়

সূচনা

অধ্যবসায় হলো, মানুষের জীবনে যেকোনাে লক্ষ্য অর্জনের জন্য নিরবচ্ছিন্ন ও একনিষ্ঠ প্রচেষ্টার নাম। কেউ ব্যর্থ হতে পছন্দ করে না। সবাই সফল হতে চায়। কিন্তু মানুষ সবসময় সফল হতে পারে না। সফল হওয়ার জন্য আপনাকে বারবার চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। আর একেই বলে অধ্যবসায়। 

অধ্যবসায় ছাড়া জীবনে উন্নতি করা যায় না। মানব সভ্যতার এগিয়ে যাওয়ার জন্য অধ্যবসায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। অবিচল সংকল্প নিয়ে, সকল প্রতিকূলতা অতিক্রম করে, অপরিসীম ধৈর্যের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে সাফল্য লাভ করা চরিত্রের মহান গুণটির নামই অধ্যবসায়। 

জীবনে সফল হতে চাই একাগ্রতা ও নিষ্ঠা। সফলতার পথের প্রথম এবং অনিবার্য শর্ত হলো অধ্যবসায়। অধ্যবসায় ছাড়া ব্যক্তি জীবন কিংবা জাতীয় জীবন কোনো ক্ষেত্রেই সফলতা কল্পনাও করা যায় না। একমাত্র অধ্যবসায়ের বলেই মানুষ জীবনে চলার পথের সকল বাধা-বিপত্তি মোকাবেলা করে সফলতার শীর্ষে আরোহণ করতে পারে। অধ্যবসায় ব্যতীত সাফল্য লাভ করা সম্ভব নয়। 

অধ্যবসায় কোন দীর্ঘ দৌড় নয়; এটি একের পর এক অনেকগুলো ছোটো ছোটো দৌড়।

—ওয়াল্টার এলিয়ট

অধ্যবসায় কী?

অধ্যবসায় শব্দের আভিধানিক অর্থ অবিরাম সাধনা, ক্রমাগত চেষ্টা। ইংরেজি অভিধান অনুসারে, “continued effort to do or achieve something despite difficulties, failure, or opposition।”

অর্থাৎ “কঠিনতা, ব্যর্থতা বা বিরোধের সাথে সাথে কোনো কিছু করার বা অর্জন করার জন্য চিরকাল চেষ্টা।” কোনো নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য অবিরাম সাধনা বা ক্রমাগত চেষ্টা চালিয়ে যাওয়াকে বলে অধ্যবসায়। অধ্যবসায়ের কারণেই মানুষের প্রযুক্তি, বৈজ্ঞানিক গবেষণা, উদ্ভাবন, এবং অর্থনৈতিক উন্নতির ও মানব সভ্যতা অগ্রসর হচ্ছে। 

অধ্যবসায়ের গুরুত্ব

মানবসভ্যতার অগ্রগতির প্রধান চালিকাশক্তি  হলো অধ্যবসায়। আদিম মানুষ মাটিতে, পানিতে, আকাশে বৈরীশক্তিকে মােকাবিলা করে নিজের অস্তিত্ব রক্ষায় সফল হয়েছে অধ্যবসায়ের মাধ্যমে। অনাবাদি জমি আবাদ করে ফসল ফলানাে, জলাভূমি ভরাট করে নগর পত্তন, মরুভূমিকে মরূদ্যানে রূপান্তর—সবই অধ্যবসায়ের দান। ছাত্রজীবন ব্যক্তির মানস গঠনের শ্রেষ্ঠ সময়। পরবর্তী জীবন সংগ্রামের জন্য প্রস্তুত হবার উপযুক্ত সময় এই ছাত্রজীবন। তাই ছাত্রজীবনে অধ্যবসায়ের গুণ আয়ত্ত করা সর্বাপেক্ষা প্রয়োজনীয়। অধ্যবসায় ব্যতীত ছাত্রজীবনে সাফল্য অর্জন করা সম্ভব নয়। অলস ও শ্রমবিমুখ ছাত্র-ছাত্রী যতই মেধাবী হোক না কেন, শেষ পর্যন্ত সে বিদ্যার্জনে সফলতা লাভ করতে পারে না। অন্যদিকে একজন অধ্যবসায়ী ছাত্র বা ছাত্রী স্বল্প মেধাসম্পন্ন হলেও ভালো ছাত্র হিসেবে নিজের কৃতিত্ব প্রতিষ্ঠা করতে সফল হয়।

“সবচেয়ে কঠিন কাজ শক্তি দিয়ে নয় বরং অধ্যবসায়ের দ্বারা সম্পাদিত হয়।”

— স্যামুয়েল জনসন

ইংরেজিতে একটা প্রবাদ আছে- ‘Failure is the pillar of success’ ব্যর্থ না হলে সফলতার মর্ম বোঝা যায় না। তাই একবার অকৃতকার্য হলে হতাশ হয়ে হাল ছেড়ে দেওয়া বোকামি বরং অধ্যবসায়ের দ্বারা লক্ষ্য অর্জনের দিকে এগিয়ে যাওয়া উচিত। 

ব্যক্তিজীবনে অধ্যবসায়

মানুষের জীবন ফুলের বিছানা নয়। জীবনের পথপরিক্রমায় নানা সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়। আর এই সমস্যা মােকাবিলার উপায় অধ্যবসায়। অধ্যবসায়ী ব্যক্তির পক্ষেই জীবনসংগ্রামে জয়ী হওয়া সম্ভব। যে অধ্যবসায়ী নয়, তার দ্বারা কোনাে মহৎ কাজ সম্ভব নয়। ব্যক্তিজীবনে অধ্যবসায় খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অধ্যবসায় সঠিকভাবে ব্যবহার করা হলে শক্তির অভাব সাফল্যের পথে বাধা নয়। পৃথিবীতে সবাই প্রতিভা নিয়ে জন্মায়। এই পরিস্থিতিতে একজনের প্রতিভা হয় সুপ্ত বা জাগ্রত। এই সুপ্ত প্রতিভাকে জাগ্রত করতে হলে প্রয়োজন সাধনা ও পরিশ্রম। জীবনের যুদ্ধে জয়ী হতে সাহস ও দৃঢ়তা লাগে। এই ক্ষমতা একজন মানুষের মধ্যে একটি বিস্ময়কর গুণ। ব্যক্তিগত বিষয়ে সাফল্য অধ্যবসায় থেকে আসে। একজন ব্যক্তির জীবনের সমস্ত ইচ্ছা অধ্যবসায় দ্বারা পূর্ণ হয়। দৈনন্দিন জীবনে অধ্যবসায়ের মূল্য তাই বিশাল।

প্রথম চেষ্টাতে সফল না হলে যারা ভেঙে পড়ে, হতাশ হয়, তারা বেশি দূর এগোতে পারে না। কোনো কাজে একবারে সফল না হলে, সেই কাজ নতুনভাবে, নতুন উদ্যমে, দৃঢ় মনোবল নিয়ে করতে পারলে সফলতা আসবে নিশ্চিত। জীবনে কোনো কিছু সহজে পাওয়া যায় না। কোনো জিনিস অর্জন করতে হলে বিপদ সংকুল পথ পাড়ি দিতেই হবে। অধ্যবসায়ী মানুষ নিজের কাজে সফল হতে যে কোনো রকম পরিস্থিতিতে নিজেকে মানিয়ে নিতে সক্ষম। অধ্যবসায়ী না হলে জীবনে কখনোই উন্নতি করা সম্ভব নয়। জগতের বড়ো বড়ো সব কবি, সাহিত্যিক, দার্শনিক, বিজ্ঞানী, সৈনিক সবাই ছিলেন অধ্যবসায়ী। তাই ব্যক্তিজীবনে অধ্যবসায়ের ভূমিকা অপরিহার্য।

জাতীয় জীবনে অধ্যবসায়ের গুরুত্ব

ইংরেজিতে একটি প্রবাদ রয়েছে,”Rome wasn’t built in a day।” রোম সভ্যতা একদিনে গড়ে ওঠেনি। জাতির সম্মিলিত প্রচেষ্টায় গড়ে ওঠে সভ্যতা। 

যে জাতি যত বেশি অধ্যবসায়ী সে জাতি তত বেশি উন্নত। জাতীয় জীবনে অধ্যবসায়ের গুরুত্ব অপরিসীম। যে কোনো কাজে সফলতা আসে অধ্যবসায়ের মাধ্যমে, হোক সেটা ব্যক্তিজীবনে বা জাতীয়জীবনে। অধ্যবসায়ের কারণে জাপান যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ হয়েও বর্তমানে পৃথিবীর উন্নত দেশগুলোর একটি। চীনের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। গত তিন-চার দশকে চীনের মানুষ নিজেদের দারিদ্র মুক্ত করতে পেরেছে। চীন হয়েছে বিশ্বের অর্থনৈতিক সুপার পাওয়ার। কোনো দেশকে উন্নতির শিখরে পৌঁছাতে হলে সেই দেশের প্রতিটি নাগরিককে অধ্যবসায়ী হতে হবে নিঃসন্দেহে। অবশ্য ব্যক্তিজীবনে অধ্যবসায়ের ফল জাতীয় জীবনের বৃহত্তম কল্যাণ নিয়ে আসে। সমস্ত উন্নত সভ্যতাই জাতীয় অধ্যবসায়ের ফল। 

রমন মহর্ষি বলেন, “চেষ্টা ছাড়া কেউ সফল হয় না। যারা সফল হয় তাদের অধ্যবসায়ের ঘাটতি থাকে না।”

ছাত্রজীবনে অধ্যবসায়

ছাত্রজীবনকে জীবনের সোনালি যুগ বলা হয়। এ সময়ে সকল ভালো গুণগুলো তৈরি হয়।

ছাত্রজীবনে অন্যান্য গুণাবলী অর্জনের সাথে সাথে অধ্যবসায়ী হওয়ার শিক্ষা লাভ করা একান্ত  প্রয়োজন। কারণ ছাত্রজীবনই হলো একজন মানুষের ভবিষ্যৎ জীবনের মূল ভিত্তি। আলস্যপরায়ণ ও শ্রমবিমুখ ছাত্র কখনো বিদ্যার্জন করতে পারে না। কোনো ছাত্র অল্প মেধাসম্পন্ন হলেও অধ্যবসায়ের মাধ্যমে সফলতা লাভ করতে সক্ষম। অনেক ছাত্র পরীক্ষায় অকৃতকার্য হলে হতাশ হয়ে পড়ে। কিন্তু সাফল্য লাভ করতে হলে হতাশ না হয়ে তাকে দ্বিগুণ উদ্যমে পড়াশোনায় মনোযোগী হতে হবে। কারণ চেষ্টা করলে তবেই সাফল্য আসবে। অধ্যবসায়ের মাধ্যমে ছাত্রজীবনে অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জন সম্ভব। এ পি জে আবুল কালাম আজাদ বলেন, চারটি জিনিস যদি অনুসরণ করা যায় তাহলে সব কিছুই অর্জন করা সম্ভব–

  •  একটি সঠিক লক্ষ্য স্থির।
  •  জ্ঞান অর্জন।
  • কঠোর পরিশ্রম।
  • অধ্যবসায় ।

ধর্ম পালনে অধ্যবসায়

অধ্যবসায়ের অনেকগুলি উদাহরণ রয়েছে যা ধর্মের সমস্ত প্রধান শাখাগুলিতে পাওয়া যেতে পারে। এখানে কিছু উদাহরণ দেওয়া হল:

হিন্দুধর্মে অধ্যবসায়

অধ্যবসায়ের গুণটিকে “ধৈর্য” হিসাবে উল্লেখ করা হয়। ধৈর্য হলো এমন একটি গুণ—যা আমাদেরকে কঠিন পরিস্থিতিতে ধৈর্য ধরতে এবং আমাদের লক্ষ্যগুলি অর্জনে অবিচল থাকতে সাহায্য করে। হিন্দুধর্মের অনেকগুলি দেবতা এবং দেবীকে ধৈর্যের প্রতীক হিসাবে দেখা হয়, যেমন দেবী দুর্গা।

খ্রিস্টধর্মে অধ্যবসায়

অধ্যবসায়ের গুণটিকে “বিশ্বাস” হিসাবে উল্লেখ করা হয়। বিশ্বাস হলো এমন একটি গুণ যা আমাদেরকে আমাদের বিশ্বাসের উপর নির্ভর করতে এবং কঠিন পরিস্থিতিতেও আমাদের লক্ষ্যগুলি অর্জনে আশাবাদী থাকতে সাহায্য করে। খ্রিস্টধর্মের অনেকগুলি নবি এবং সাধুকে বিশ্বাসের প্রতীক হিসাবে দেখা হয়, যেমন- যীশু খ্রিস্ট।

ইসলামে অধ্যবসায়

অধ্যবসায়ের গুণটিকে “ঈমান” হিসাবে উল্লেখ করা হয়। ইমান হলো এমন একটি গুণ যা আমাদেরকে আমাদের বিশ্বাসের উপর নির্ভর করতে এবং কঠিন পরিস্থিতিতেও আমাদের লক্ষ্যগুলি অর্জনে আশাবাদী থাকতে সাহায্য করে। ইসলামের অনেকগুলি নবি এবং সাহাবিকে ইমানের প্রতীক হিসাবে দেখা হয়, যেমন- মুহাম্মদ (সা.)।

বৌদ্ধধর্মে অধ্যবসায় 

অধ্যবসায়ের গুণটিকে “ধ্যান” হিসাবে উল্লেখ করা হয়। ধ্যান হলো এমন একটি গুণ যা আমাদেরকে আমাদের মনকে শান্ত করতে এবং আমাদের লক্ষ্যগুলি অর্জনে মনোনিবেশ করতে সাহায্য করে। বৌদ্ধধর্মের অনেকগুলি শাস্ত্রে ধৈর্যের গুণের প্রশংসা করা হয়েছে। এইগুলি হলো অধ্যবসায়ের গুণের মাত্র কয়েকটি উদাহরণ যা ধর্মের সমস্ত প্রধান শাখাগুলিতে পাওয়া যেতে পারে।

শিক্ষকদের জন্য অধ্যবসায়ের গুরুত্ব

অধ্যবসায় হলো একটি গুরুত্বপূর্ণ গুণ যা শিক্ষকদের জন্য প্রয়োজন। শিক্ষকদেরকে তাদের শিক্ষার্থীদের শেখানোর জন্য কঠোর পরিশ্রম করতে হয়, এবং তাদেরকে কখনও কখনও প্রতিকূলতাগুলিকে মোকাবেলা করতে হয়। অধ্যবসায় তাদেরকে এই চ্যালেঞ্জগুলিকে অতিক্রম করতে এবং তাদের শিক্ষার্থীদেরকে সফল হতে সাহায্য করতে দেয়।

অধ্যবসায়ের অনেকগুলি সুবিধা রয়েছে। এটি শিক্ষকদেরকে তাদের শিক্ষার্থীদের ভালোভাবে শেখানোর জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা এবং জ্ঞান অর্জন করতে সাহায্য করে। এটি তাদেরকে কঠিন শিক্ষার্থীদের সাথে মোকাবেলা করতে এবং তাদেরকে সফল হতে সাহায্য করতে দেয়। এটি তাদেরকে তাদের পেশায় সন্তুষ্ট এবং অনুপ্রাণিত থাকতে সাহায্য করে। অধ্যবসায় অর্জনের জন্য কিছু কৌশল রয়েছে। প্রথমত, শিক্ষকদেরকে তাদের লক্ষ্যগুলিকে পরিষ্কারভাবে নির্ধারণ করতে হবে। তাদেরকে জানতে হবে যে তারা তাদের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কী অর্জন করতে চায়, এবং তাদেরকে তাদের লক্ষ্যগুলিকে ছোটো, আরও ব্যবস্থাপনাযোগ্য লক্ষ্যগুলিতে বিভক্ত করতে হবে। 

দ্বিতীয়ত, শিক্ষকদেরকে তাদের লক্ষ্যগুলি অর্জনের জন্য একটি পরিকল্পনা তৈরি করতে হবে। তাদেরকে জানতে হবে যে তারা কীভাবে তাদের শিক্ষার্থীদেরকে সফল করতে পারে, এবং তাদেরকে তাদের পরিকল্পনাটিকে বাস্তবায়নে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হতে হবে। তৃতীয়ত, শিক্ষকদেরকে প্রতিকূলতাগুলিকে মোকাবেলা করতে হবে। তাদেরকে মনে রাখতে হবে যে অধ্যবসায়ের পথে সবসময় বাধা আসবে, কিন্তু তারা যদি তাদের লক্ষ্যগুলি অর্জনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকেন, তাহলে তারা অবশেষে তাদের লক্ষ্যগুলি অর্জন করতে সক্ষম হবেন।

ব্যবসায় অধ্যবসায়ের গুরুত্ব

ব্যবসায়ে অধ্যবসায়ের গুরুত্বের কিছু উদাহরণ দেওয়া হল:

  • একটি নতুন ব্যবসা শুরু করার সময়, অধ্যবসায় একটি ব্যবসায়ীকে প্রতিকূলতাগুলিকে মোকাবেলা করতে এবং তাদের ব্যবসাকে সফল করতে সাহায্য করে।
  • একটি নতুন পণ্য বা পরিষেবা চালু করার সময়, অধ্যবসায় একটি ব্যবসায়ীকে তাদের পণ্য বা পরিষেবাকে জনপ্রিয় করতে এবং তাদের ব্যবসাকে বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
  • একটি নতুন বাজারে প্রবেশ করার সময়, অধ্যবসায় একটি ব্যবসায়ীকে তাদের ব্যবসাকে নতুন বাজারে প্রতিষ্ঠিত করতে এবং তাদের ব্যবসাকে বিস্তৃত করতে সাহায্য করে।
  • একটি প্রতিযোগিতামূলক বাজারে, অধ্যবসায় একটি ব্যবসায়ীকে তাদের ব্যবসাকে প্রতিযোগিতায় এগিয়ে যেতে এবং তাদের ব্যবসাকে সফল করতে সাহায্য করে।

অধ্যবসায় একটি গুরুত্বপূর্ণ গুণ যা ব্যবসায়ীদের জন্য প্রয়োজন। যদি ব্যবসায়ীরা অধ্যবসায়ী হন, তাহলে তারা তাদের লক্ষ্যগুলি অর্জন করতে পারবেন, তারা আরও সফল হতে পারবেন, এবং তারা আরও সন্তুষ্ট হতে পারবেন।

অধ্যবসায়ের উদাহরণ

অধ্যবসায়ের অনেকগুলি উদাহরণ রয়েছে যা আমরা আমাদের চারপাশে দেখতে পারি। এখানে কিছু উদাহরণ দেওয়া হল।

  • একজন শিক্ষার্থী যিনি কঠোর পরিশ্রম করে এবং শেষ পর্যন্ত তার স্বপ্নের কলেজ থেকে স্নাতক হন।
  • একজন ব্যবসায়ী যিনি তার ব্যবসায় প্রতিকূলতাগুলিকে মোকাবেলা করে এবং শেষ পর্যন্ত সফল হন।
  • একজন ক্রীড়াবিদ যিনি কঠোর পরিশ্রম করে এবং শেষ পর্যন্ত বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হন।
  • একজন শিল্পী যিনি কঠোর পরিশ্রম করে এবং শেষ পর্যন্ত তার স্বপ্নের কাজ অর্জন করেন।

এইগুলি হল অধ্যবসায়ের মাত্র কয়েকটি উদাহরণ। অধ্যবসায় একটি শক্তিশালী গুণ যা আমাদেরকে আমাদের জীবনে অনেক কিছু অর্জন করতে সাহায্য করতে পারে। যদি আমরা অধ্যবসায়ী হই, তাহলে আমরা আমাদের লক্ষ্যগুলি অর্জন করতে পারি, আমরা আরও সফল হতে পারি, এবং আমরা আরও সন্তুষ্ট হতে পারি।

অধ্যবসায়ের চর্চা

অধ্যবসায়ের চর্চা করার অনেকগুলি উপায় আছে। এখানে কয়েকটি টিপস দেওয়া হল:

  • একটি লক্ষ্য নির্ধারণ করুন যা আপনি অর্জন করতে চান। আপনার লক্ষ্যটি যতটা সম্ভব নির্দিষ্ট, পরিমাপযোগ্য, অর্জনযোগ্য, প্রাসঙ্গিক এবং সময়-সীমাবদ্ধ হওয়া উচিত।
  • আপনার লক্ষ্য অর্জনের জন্য একটি পরিকল্পনা তৈরি করুন। আপনার পরিকল্পনাটি আপনার লক্ষ্যটি অর্জনের জন্য আপনাকে কী করতে হবে তা বিশদভাবে বর্ণনা করা উচিত।
  • আপনার লক্ষ্য অর্জনের জন্য প্রতিদিন কাজ করুন। যত বেশি আপনি কাজ করবেন, তত বেশি আপনি আপনার লক্ষ্যটির কাছাকাছি পৌঁছাবেন।
  • প্রতিকূলতাগুলিকে মোকাবেলা করুন। অধ্যবসায়ের পথে সবসময় বাধা আসবে, কিন্তু আপনি যদি আপনার লক্ষ্যগুলি অর্জনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকেন, তাহলে আপনি অবশেষে আপনার লক্ষ্যগুলি অর্জন করতে সক্ষম হবেন।
  • আপনার অগ্রগতি অনুসরণ করুন। আপনার অগ্রগতি অনুসরণ করা আপনাকে উৎসাহিত করবে এবং আপনাকে আপনার লক্ষ্যগুলি অর্জনের পথে থাকতে সাহায্য করবে।
  • অন্যদের সাথে আপনার লক্ষ্যগুলি শেয়ার করুন। অন্যদের সাথে আপনার লক্ষ্যগুলি শেয়ার করা আপনাকে দায়বদ্ধ থাকতে সাহায্য করবে এবং আপনাকে আপনার লক্ষ্যগুলি অর্জনের জন্য আরও অনুপ্রাণিত করবে।

অধ্যবসায়ের অপব্যবহার

অধ্যবসায়ের অপব্যবহার হলো অধ্যবসায়ের গুণকে এমনভাবে ব্যবহার করা যা ক্ষতিকারক বা অপ্রয়োজনীয়। অধ্যবসায়ের অপব্যবহার বিভিন্নভাবে হতে পারে, যেমন:

  1. একটি লক্ষ্য অর্জনের জন্য এত বেশি পরিশ্রম করা যে আপনি নিজের স্বাস্থ্য বা ব্যক্তিগত জীবনের যত্ন নেওয়া বন্ধ করে দেন।
  1. এমন একটি লক্ষ্য অর্জনের জন্য এত বেশি পরিশ্রম করা যে আপনি অন্যদের সাথে সম্পর্ক নষ্ট করে দেন।
  1. এমন একটি লক্ষ্য অর্জনের জন্য এত বেশি পরিশ্রম করা যে আপনি মানসিক চাপ বা হতাশা অনুভব করেন।

অধ্যবসায়ের অপব্যবহার একটি গুরুতর সমস্যা হতে পারে। যদি আপনি অধ্যবসায়ের অপব্যবহার করছেন বলে মনে করেন, তাহলে আপনার লক্ষ্যগুলি পুনর্বিবেচনা করা এবং আপনার স্বাস্থ্য এবং ব্যক্তিগত জীবনের যত্ন নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।

অধ্যবসায় ও বাঙালি জাতি

বাঙালি জাতি একটি অধ্যবসায়ী জাতি। তারা কঠিন পরিস্থিতিতেও হতাশ হয় না এবং তাদের লক্ষ্যগুলি অর্জনের জন্য কঠোর পরিশ্রম করে। বাঙালিরা তাদের অধ্যবসায়ের কারণে অনেক ক্ষেত্রে সফল হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, বাঙালিরা শিক্ষা, বিজ্ঞান, সাহিত্য, সংস্কৃতি এবং খেলাধুলায় অনেক সাফল্য অর্জন করেছে।

বাঙালিদের অধ্যবসায়ের অনেক কারণ রয়েছে। একটি কারণ হলো বাঙালিদের একটি শক্তিশালী সামাজিক বন্ধন রয়েছে। তারা তাদের পরিবার, বন্ধুবান্ধব এবং সম্প্রদায়ের সদস্যদের সাথে খুব ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত। এই সামাজিকবন্ধন বাঙালিদেরকে কঠিন পরিস্থিতিতেও সাহায্য করে এবং তাদেরকে তাদের লক্ষ্যগুলি অর্জনের জন্য অনুপ্রাণিত করে।

আরেকটি কারণ হলো বাঙালিদের একটি শক্তিশালী ঐতিহ্য রয়েছে। বাঙালিরা তাদের ঐতিহ্যকে খুব গুরুত্ব দেয় এবং তারা তাদের ঐতিহ্যকে তাদের জীবনে অনুসরণ করে। এই ঐতিহ্য বাঙালিদেরকে তাদের লক্ষ্যগুলি অর্জনের জন্য অনুপ্রাণিত করে এবং তাদেরকে শক্তি দেয়।

বাঙালিদের অধ্যবসায় তাদেরকে একটি সমৃদ্ধ এবং ঐতিহ্যবাহী জাতি হিসেবে গড়ে তুলেছে। তারা তাদের অধ্যবসায়ের কারণে অনেক ক্ষেত্রে সফল হয়েছে এবং তারা আগামীতেও অনেক সাফল্য অর্জন করবে বলে আশা করা যায়।

অধ্যবসায় এর শিক্ষা

অধ্যবসায় আমাদেরকে অনেক কিছু শিক্ষা দেয়। এটি আমাদেরকে শিক্ষা দেয় যে:

  • আমরা যা চাই তা অর্জন করতে পারি, যদি আমরা কঠোর পরিশ্রম করি এবং কখনও হাল না ছাড়ি।
  • প্রতিকূলতাগুলি আমাদেরকে আরও শক্তিশালী করে তোলে।
  • আমাদের লক্ষ্যগুলি অর্জনের জন্য আমাদেরকে ধৈর্যশীল হতে হবে।
  • আমরা যা চাই তা অর্জনের জন্য আমাদেরকে কখনও হতাশ হওয়া উচিত নয়।
  • আমরা যা চাই তা অর্জনের জন্য আমাদেরকে আমাদের আত্মবিশ্বাসকে জাগাতে হবে।

অধ্যবসায়ের কিছু উদাহরণ কী কী?

অধ্যবসায়ের কিছু উদাহরণ হলো:

একজন ছাত্র দীর্ঘদিন ধরে অধ্যবসায়ের মাধ্যমে একটি প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া।
একজন খেলোয়াড় দীর্ঘদিন ধরে অনুশীলনের মাধ্যমে একটি আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করা।
একজন উদ্যোক্তা দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা করে অবশেষে একটি ব্যবসায়িক উদ্যোগ সফল করা।
একজন ব্যক্তি দীর্ঘদিন ধরে অধ্যবসায়ের মাধ্যমে একটি কঠিন রোগ থেকে সুস্থ হওয়া।

উপসংহার

সাফল্য অর্জনের জন্য অধ্যবসায় অপরিহার্য। যদি তুমি তোমার লক্ষ্য অর্জনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হও এবং কখনও হাল না ছাড়ো, তাহলে তুমি অবশেষে সাফল্য অর্জন করবে। অধ্যবসায়ী মানুষরা ধৈর্যশীল এবং অবিচল হয়। তারা তাদের লক্ষ্য অর্জনের জন্য কঠোর পরিশ্রম করে এবং তারা কখনও হাল ছাড়ে না। তারা প্রতিকূলতাগুলিকে মোকাবেলা করে এবং তারা অবশেষে সাফল্য অর্জন করে।

“অধ্যবসায় হলো অসাধ্যকে সম্ভব করে তোলে।”

নেলসন মান্ডেলা

আশাকরি, আমাদের অধ্যবসায় রচনাটি পড়ে উপকৃত হয়েছেন।

অধ্যবসায় রচনা PDF

নিচে অধ্যবসায় রচনা pdf দেওয়া হয়েছে।

File nameঅধ্যবসায় রচনা PDF
FormatPDF
LanguageBangla
Contentবাংলা রচনা
PriceFree
Ownerwww.studykoro.com
Get fileDownload

FAQs

অধ্যবসায়ের গুরুত্ব কী?

অধ্যবসায়ের গুরুত্ব অপরিসীম। এটি আমাদেরকে নিম্নলিখিত সুবিধাগুলো প্রদান করে:
১. আমাদেরকে আমাদের লক্ষ্য অর্জনে সাহায্য করে।
২. আমাদেরকে কঠিন পরিস্থিতিতেও উৎসাহিত রাখে।
৩. আমাদেরকে ব্যর্থতা থেকে উঠে দাঁড়াতে সাহায্য করে।
৪. আমাদেরকে আত্মবিশ্বাসী ও দৃঢ়প্রতিজ্ঞ করে তোলে।
৫. আমাদেরকে জীবনের সকল ক্ষেত্রে সফল হতে সাহায্য করে।

অধ্যবসায় কীভাবে গড়ে তোলা যায়?

অধ্যবসায় গড়ে তোলার জন্য নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করা যেতে পারে:
১. আমাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যগুলি পরিষ্কারভাবে নির্ধারণ করা।
২. আমাদের লক্ষ্য অর্জনের জন্য একটি পরিকল্পনা তৈরি করা।
৩. প্রতিদিন আমাদের লক্ষ্য অর্জনের জন্য কাজ করা।
৪. ব্যর্থতার ভয়কে জয় করা।
৫. ধৈর্য ধরা ও কঠোর পরিশ্রম করা।

অধ্যবসায় আমাদের জীবনে কীভাবে প্রভাব ফেলে?

অধ্যবসায় আমাদের জীবনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। এটি আমাদেরকে নিম্নলিখিত উপায়ে সাহায্য করে:
১. আমাদেরকে আমাদের লক্ষ্য অর্জনে সাহায্য করে।
২. আমাদেরকে আরও আত্মবিশ্বাসী ও দৃঢ়প্রতিজ্ঞ করে তোলে।
৩. আমাদেরকে জীবনের সকল ক্ষেত্রে সফল হতে সাহায্য করে।
৪. আমাদেরকে একজন ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে সাহায্য করে।

অধ্যবসায় একটি মূল্যবান গুণ যা আমাদের জীবনের সকল ক্ষেত্রে সফল হতে সাহায্য করে। তাই আমাদের সকলের উচিত অধ্যবসায় গড়ে তোলার জন্য কঠোর পরিশ্রম করা।

Share this article

Content Writer
Studies at Natore Government Boys High School
Lives in Natore, Rajshahi
আমি কখনও হারিনি। হয় জিতেছি, না হয় শিখেছি।
Comments
guest
0 Comments
Inline Feedbacks
View all comments

Related articles

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস রচনা

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস রচনা ২০ পয়েন্ট

সুপ্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা, প্রায়ই তোমরা পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে “আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস” রচনা আসতে দেখো। তাই আজকে আমি তোমার জন্য সহজ সরল ভাষায় ২১শে ফ্রেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস রচনা লিখছি।  আশাকরি, পরীক্ষার

English blog

ক্যাটাগরি

অনুসন্ধান করুন

সঠিক কিওয়ার্ড লিখে খুঁজে নিন আপনার দরকারি পোস্টটি!

Share this page
অধ্যবসায় রচনা ২০ পয়েন্ট

অধ্যবসায় রচনা: সহজ ভাষায় পয়েন্ট আকারে

https://www.studykoro.com/odhabosay-rochona/

Report this book

Let us know if you notice any incorrect information about this PDF book. Also, please let us know if the given PDF file is banned for sharing; we will remove it as soon as possible. 

User Profile Picture

YourName