Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

সারোগেসি: নিজের গর্ভে অন্যের সন্তান জন্ম দেওয়া

Last updated on April 12th, 2024

সারোগেসি পদ্ধতি কি

সারোগেসি এমন একটি ব্যবস্থা, যেখানে একজন মহিলা অন্য দম্পতি বা পুরুষের পক্ষে গর্ভধারণ করে সন্তান প্রসব করেন। অন্যভাবে বললে, একজন নারীর গর্ভে অন্য দম্পতি বা পুরুষের সন্তান ধারণ করার পদ্ধতিকে সারোগেসি বলে। 

ইন ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন পদ্ধতির মাধ্যমে নারীদেহ হতে ডিম্বাণু ও পুরুষদেহ থেকে শুক্রাণু দেহের বাইরে টেস্ট টিউবে নিষিক্ত করে সেটা সারোগেট নারীর গর্ভাশয়ে প্রতিস্থাপন করা হয়। 

কোনো স্ত্রী গর্ভধারণে অক্ষম হলে তখন সে সারোগেসি পদ্ধতির মাধ্যমে মাতৃত্ব সুখ লাভ করতে পারেন। যে সকল নারীদের গর্ভধারণ ঝুঁকিপূর্ণ বা একজন পুরুষ, নারী বা সমকামী দম্পতি সন্তান নিতে চাইলে সারোগেসি পদ্ধতি অবলম্বন করে নিতে পারবেন। সারোগেসি অর্থ গর্ভাশয় ভাড়া নেওয়া। সারোগেসি একটি আধুনিক প্রজনন ব্যবস্থা। 

সারোগেসি পদ্ধতি কি? 

সন্তান ধারণের জন্য নারী ও পুরুষের মধ্যে যৌন মিলন প্রয়োজন। কিন্তু কিছু কিছু দম্পতির যৌন মিলনের পরেও সন্তান ধারণ করার ক্ষমতা থাকে না। তখন তারা গর্ভ ভাড়া করেন। এবং ওই গর্ভে পুরুষের শুক্রাণু আইভিএফ পদ্ধতির মাধ্যমে ভাড়া করা গর্ভে প্রতিস্থাপন করা হয়।

আইভিএফ (ইন ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন) বা টেস্ট টিউব পদ্ধতি হলো সারোগেসির অন্যতম একটি প্রযুক্তি মাধ্যম। তাই সারোগেসি পদ্ধতিকে টেস্ট টিউব পদ্ধতিও বলা হয়। 

সাধারণত নারীর গর্ভে যেভাবে একটি ডিম্বাণুর পরিস্ফুটন হয় সেটিকে টেস্ট টিউবের মাধ্যমে ল্যাবে করা হয়। পুরুষের শুক্রাণু নেওয়ার পর নারীর শরীর থেকে ডিম্বাণু বের করে একটি সূচের মাধ্যমে শুক্রাণুতে প্রবেশ করানো হয়। এরপর কাচের মধ্যে ভ্রুণ প্রস্তুত করা হয়। তারপর একটি টিউবের মাধ্যমে সারোগেট নারীর জরায়ুতে প্রবেশ করানো হয়। আর এই সম্পূর্ণ পদ্ধতিটি হলো সারোগেসি পদ্ধতি। 

সারোগেসি পদ্ধতি কত প্রকার?

সারোগেসি পদ্ধতি ২ প্রকার।

  1. ট্রেডিশনাল সারোগেসি
  2. জেস্টেশনাল সারোগেসি

১. ট্রেডিশনাল সারোগেসি: যখন কোনো দম্পতির ডিম্বানু একেবারেই উৎপন্ন হয় না তখন সারোগেট মায়ের ডিম্বাণু ব্যবহার করে গর্ভধারণ করা হয়। এক্ষেত্রে দম্পতির পুরুষ সঙ্গীর শুক্রাণু সারোগেট মাকে দেওয়া হয়। এক্ষেত্রে সারোগেট মায়ের সঙ্গে বাচ্চার জিনের মিল থাকে। বাচ্চার শরীরে সারোগেট মায়ের জিন ও বাবার জিন থাকবে। 

২. জেস্টেশনাল সারোগেসি: আইভিএফ পদ্ধতির মাধ্যমে জেস্টেশনাল সারোগেসি করা হয়। এখানে যারা সন্তানের মা-বাবা হবেন তাদের ডিম্বাণু ও শুক্রাণু ব্যবহার করে অন্য নারী গর্ভধারণ করেন। এই পদ্ধতিতে সারোগেট মায়ের সাথে সন্তানের কোনো সম্পর্ক থাকে না। 

সারোগেসি পদ্ধতির খরচ 

গর্ভ ভাড়া বা সারোগেসির মাধ্যমে সন্তান জন্ম দিতে গেলে সারোগেট মায়ের আনুষাঙ্গিক খরচের পরিমাণ স্থান, বীমা পলিসি এবং সারোগেট মাদারের শর্তের উপর নির্ভর করবে।? উল্লেখ্য, অনেক দেশে সারোগেসি পদ্ধতি আইনত নিষিদ্ধ।

বাংলাদেশে সারোগেসি

বাংলাদেশের আইনে ট্রেডিশনাল সারোগেসি বৈধ না। তবে টেস্ট টিউব বেবি আইনত বৈধ। 

তবে গোপনে গর্ভ ভাড়া করে সন্তানের বাবা-মা হওয়ার অনেক ঘটনা ঘটছে। আবার অনেকে ভারত গিয়ে গর্ভ ভাড়া নিচ্ছেন এবং ফেরার পথে সন্তানসহ ফিরছেন। 

সারোগেসির ফলে স্বাস্থ্যের ঝুঁকি

সারোগেসি একটি জটিল পদ্ধতি। এতে একাধিক জটিলতা থাকে। যেমন- জেস্টেশনাল ডায়াবিটিস (Gestational Diabetes), প্রি-ইক্লামপসিয়া (Pre-eclampsia), অগ্রিম প্রসব (Premature Birth), ইকটোপিক গর্ভাবস্থা (Ectopic Pregnancy) ইত্যাদি। এই সকল ঝুঁকি এড়াতে প্রয়োজনীয় মেডিকেল পরিচর্যা ও সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।

সারোগেসি সম্পর্কে ইসলাম কী বলে? 

ইসলামের দৃষ্টিতে টেস্ট টিউব বেবি হালাল হলেও সারোগেসি হারাম। ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গিতে সারোগেসি জিনা ব্যভিচারের সমতুল্য। কারণ সারোগেট এর গর্ভে বৈধ স্বামী না এমন ব্যক্তির নিষিক্ত ডিম বহন করে। এই জন্য সন্তানটি অবৈধ বলে গণ্য হবে। ১১-১৬ই অক্টোবর ১৯৮৬ সালে জর্ডানের রাজধানীতে ইসলামিক ফিকহ একাডেমি কাউন্সিলের তৃতীয় অধিবেশনে ঘোষণা করা হয় ‘সারোগেসি ইসলামে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। সারোগেসি পদ্ধতি সম্পর্কে ইসলাম কী বলে তা বিস্তারিত জানতে Islam Question & Answer ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন।

সারোগেসি কত প্রকার?

সারোগেসি পদ্ধতি ২ প্রকার। যথা- ১. ট্রেডিশনাল সারোগেসি এবং ২. জেস্টেশনাল সারোগেসি।

সারোগেসি কেন করা হয়?

বন্ধ্যাত্ব, মাতৃ রোগ বা অকাল গর্ভপাত জনিত সমস্যার কারণে স্বাভাবিক নিয়মে সন্তান জন্মদানে অক্ষম, অন্যের সাহায্যে সন্তান পাওয়ার ইচ্ছে, এমন নানা কারণে সন্তান প্রাপ্তির জন্য সারোগেসি পদ্ধতি গ্রহণ করে থাকে।

সারোগেট মা মানে কী?

যে নারী অন্য কোনো পুরুষের বা দম্পতির জন্য নিজের গর্ভে সন্তান ধারণ করেন, তাকে সারোগেট মা বলা হয়ে থাকে। সারোগেসি মাদার আর সারোগেট মা একই।

সারোগেট মা কীভাবে গর্ভবতী হয়?

একজন নারীর গর্ভে অন্য দম্পতি বা পুরুষের সন্তান ধারণ করার পদ্ধতিকে সারোগেসি বলে। ইন ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন পদ্ধতির মাধ্যমে নারীদেহ হতে ডিম্বাণু ও পুরুষদেহ থেকে শুক্রাণু দেহের বাইরে টেস্ট টিউবে নিষিক্ত করে সেটা সারোগেট নারীর গর্ভাশয়ে প্রতিস্থাপন করা হয়। তারপর থেকে ভ্রুণ সারোগেট মায়ের গর্ভে বাড়তে থাকে। এভাবেই সারোগেট মা গর্ভবতী হয়।

সারোগেসি পদ্ধতি কি জায়েজ?

ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গিতে সারোগেসি জিনা ব্যভিচারের সমতুল্য। কারণ সারোগেটের গর্ভে বৈধ স্বামী না এমন ব্যক্তির নিষিক্ত ডিম বহন করে। এই জন্য সন্তানটি অবৈধ বলে গণ্য হবে। ১১-১৬ই অক্টোবর ১৯৮৬ সালে জর্ডানের রাজধানীতে ইসলামিক ফিকহ একাডেমি কাউন্সিলের তৃতীয় অধিবেশনে ঘোষণা করা হয় ‘সারোগেসি ইসলামে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।’

স্বীকারোক্তি

সারোগেসি নৈতিকতা বিবর্জিত একটা পদ্ধতি। আমরা সারোগেসি পদ্ধতি প্রসারের জন্য এই লেখাটি প্রকাশ করিনি। শুধুমাত্র সারোগেসি পদ্ধতি সম্পর্কে জানাতে প্রকাশ করেছি। 

Share this article

Content Writer
Lives in Pabna, Bangladesh
আমি রোকসানা ফেরদৌস। পড়াশোনা করছি ফুড এন্ড নিউট্রিশন সাবজেক্টে। আমার নতুন নতুন তথ্য জানতে এবং জানাতে ভালো লাগে।
Comments
guest
0 Comments
Inline Feedbacks
View all comments

Related articles

টেস্ট টিউব বেবি কাকে বলে - Test Tube Baby

টেস্ট টিউব বেবি কি? টেস্ট টিউব বেবি কিভাবে হয়?

টেস্ট টিউব বেবি কী, কেন এই পদ্ধতিতে বাচ্চা নেওয়া হয়, কীভাবে টেস্টটিউব বেবির জন্ম হয়, টেস্ট টিউব বেবি নিতে কত টাকা খরচ হয় এবং টেস্ট টিউব বেবি নেওয়া জায়েজ না কি নাজায়েজ জানতে পড়তে থাকুন শেষ অবধি।

English blog

  1. সারোগেসি পদ্ধতির খরচ: Investopedia
ক্যাটাগরি

অনুসন্ধান করুন

সঠিক কিওয়ার্ড লিখে খুঁজে নিন আপনার দরকারি পোস্টটি!

Share this page
সারোগেসি পদ্ধতি কি

সারোগেসি: নিজের গর্ভে অন্যের সন্তান জন্ম দেওয়া

https://www.studykoro.com/what-is-surrogacy/

Report this book

Let us know if you notice any incorrect information about this PDF book. Also, please let us know if the given PDF file is banned for sharing; we will remove it as soon as possible. 

User Profile Picture

YourName