Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

বাচ্চাদের পড়ালেখায় মনোযোগী করার উপায় | শিশুদের পড়া শেখানোর পদ্ধতি

Last updated on June 3rd, 2022

বাচ্চাদের পড়ালেখায় মনোযোগী করার উপায়

আপনার বাচ্চা কি ‌পড়াশোনায় অমনোযোগী? কিছু কৌশল অবলম্বন করলে আপনার বাচ্চা নিজ থেকে পড়াশোনা করবে এবং তার ব্রেন উন্নত হতে সাহায্য করবে। আসুন বাচ্চাদের আনন্দের সাথে পড়ানোর কয়েকটি কৌশল জেনে নিই।

বাচ্চাদের পড়ালেখায় মনোযোগী করার উপায়

বাচ্চাদের পড়ালেখায় মনোযোগী করে গড়ে তুলতে নিচে উল্লেখিত পরামর্শগুলো অনুসরণ করুন।

বাচ্চাদের পড়ার রুটিন তৈরি করুন

বাচ্চাদের লাইফে রুটিন আনা খুব জরুরী। প্রতিদিন দিনে দুইবার পড়তে বসার অভ্যাস গড়ে তুলুন। এবং সেই রুটিনটা আপনার বাচ্চাকে সাথে নিয়ে ‌তৈরি করুন। তাকে জিজ্ঞেস করুন দিনের কোন‌ কোন সময় তোমার পড়তে ভালো লাগে। যদি আপনি আপনার সময় মতো তাকে পড়ান তাহলে ঐসময়টায় তার পড়তে ভালো নাও লাগতে পারে। তার ঐ সময়টায় অন্য কিছু করার ইচ্ছে করতে পারে। এতে তার পড়াশোনায় মনোযোগ আসবে ‌না। তাই তার পছন্দের সময় অনুসারে রুটিন করুন। এবং সেই রুটিন টাইমে তাকে পড়তে বসান। এই অভ্যাসটি যদি আপনি সাত থেকে দশ দিন করতে পারেন তাহলে এইটি তাদের মধ্যে সখে পরিনত হবে। তারপর দেখবেন তাকে পড়তে বসো আর বলতে হবে না।

শুরু করুন সহজ দিয়ে

আপনার বাচ্চাকে প্রতিদিন পড়া শুরু করুন সহজ দিয়ে যা সে পারে। তার আগের পড়া তাকে পড়ান এতে তার আগের পড়া রিভিশন হবে এবং সেও পড়তে আগ্রহী হবে। তার মনে হবে‌ সে সব পারে। এরপর আস্তে আস্তে নতুন পড়া শুরু করুন।

বাচ্চাদের শুধু বইয়ের মধ্যে আবদ্ধ না রাখা

বাচ্চাদের কোনো কিছু শিখাতে হলে শুধু বইয়ের মধ্যে নয় বইয়ের বাইরেও শিখান। যেমন আপনি আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী এবং অন্যান্য দেশের প্রধানমন্ত্রী বা কোনো গুণিজনদের টিভির মাধ্যমে চেনাতে পারেন। এরপর পশুপাখি চেনার জন্য চিড়িয়াখানায় নিয়ে যান অথবা টিভির মাধ্যমে শেখান। যেকোনো ছড়া শেখার সময় গানের মাধ্যমে বা মোবাইলে কার্টুনের মাধ্যমে শেখাতে পারেন।

আরো দেখুন

সঠিক স্থান বাছুন

শিক্ষার জন্য সংশ্লিষ্ট নয় এমন সব বিষয় শিশুর পড়াশোনায় বিঘ্ন ঘটাতে পারে। তাই পড়ার টেবিল এমন স্থানে বসান যেখানে টিভি বা রেডিওর মতো মনোযোগ নষ্ট করার বস্তু নেই।

উৎসাহ ও প্রশংসা

উৎসাহ ও প্রশংসা পেলে শিশুর পড়াশোনায় আগ্রহ বহুগুণ বেড়ে ওঠে। তাই তাদের উৎসাহ দিতে ভুলবেন না। সামান্য উন্নতিতে প্রশংসা করুন।

সময় নির্ধারণ করুন

বাচ্চাদের একাধারে চার থেকে পাঁচ ঘণ্টা পড়তে বসিয়ে রাখা উচিত নয়। চার থেকে পাঁচ ঘণ্টা একাধারে পড়তে বসিয়ে রাখলেই তাদের পড়া হচ্ছে এটা মনে করা বোকামি। চার থেকে পাঁচ ঘণ্টার মধ্যে তাদের বেশি হলে এক ঘন্টা পড়া হচ্ছে, কারণ এতো সময়ের মধ্যে তাদের মনোযোগ পড়ার মধ্যে থাকে না। তাই এক ঘন্টা পড়াশোনা করিয়ে দশ মিনিটের জন্য তাদের রেস্ট দেওয়া জরুরি। এই দশ মিনিট রেস্ট যেন মোবাইল টিপাটিপি বা টিভি দেখা না হয় তাতে তাদের মস্তিষ্ক বিশ্রাম পাবে না। তাই এই দশ মিনিট চোখ বন্ধ করে শুয়ে থাকতে দিন।

খেলার সময় দিন

বাচ্চাদের অবশ্যই খেলার সময় দিন। কারণ খোলা আকাশের‌ নিচে খেলাধুলা করলে বাচ্চাদের মনসংযোগ বাড়ে। খেলার জন্য তার স্কুলের সময়টা বেশি ভূমিকা রাখে। স্কুলের সময় যদি মর্নিং টাইমে হয় তাহলে তাকে সকালে পড়তে বসাবেন না। স্কুল থেকে এসে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিতে দিবেন। তারপর একটু হোম ওয়ার্ক করতে দিবেন যতটুকু সে করতে চায়। তারপর তাকে একটু খেলতে দেবেন। আর স্কুল যদি ডে টাইমে হয় তাহলে সকালে একটু পড়তে বসান। তারপর স্কুল থেকে এসে একটু বিশ্রাম নিয়ে খেলতে দিন। তারপর আবার সন্ধ্যার দিকে পড়তে বসান। মূলত আপনার বাচ্চার প্রতিদিনের রুটিনে খেলার সময়টা আপনাকে রাখতে হবে। আপনি পড়ার সময়টা যেভাবে ওকে মনে করিয়ে দেন, ঠিক সেইভাবে খেলার সময়টাও ওকে মনে করিয়ে দিবেন। তাহলে সেও একটা রুটিন এর মধ্যে আসবে। খেলার সময়ের জন্য সে যেমন অপেক্ষা করে তেমনি পড়ার সময় জন্য অপেক্ষা করবে।

শিশুদের পড়ালেখায় মনোযোগী করার উপায়

বাচ্চার পাশে বসে বই পড়ুন

বাচ্চার পাশে বসে বই পড়ুন। অনেক মায়েদের দেখা যায় বাচ্চাকে পড়তে বসিয়ে পাশে বসে মোবাইল টিপছে। এতে বাচ্চাদের পড়াশোনায় ব্যাঘাত ঘটে, তাদের মনোযোগ থাকে মোবাইলে। তাই বাচ্চাকে পড়তে বসিয়ে নিজে একটা বই নিয়ে পাশে বসবেন। যখন বাচ্চা দেখবে তার মা পড়াশোনা করছে তখন তারও পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ বাড়বে।

পড়া শেষে বাচ্চাকে পছন্দের খাবার দিবেন

বাচ্চাকে পড়তে বসিয়ে বলবেন তুমি যদি‌ এই পড়া গুলো তাড়াতাড়ি শেষ করতে পারো তাহলে আমি তোমাকে তোমার পছন্দের খাবার বানিয়ে দিবো। এতে তার পড়তে উৎসাহ হবে এবং সে তাড়াতাড়ি পড়া শেষ করবে। এভাবে প্রতিদিন তাকে তার পছন্দের এক এক খাবার এক এক দিন বানিয়ে দিন।

বাচ্চাকে নিয়মিত স্কুলে যেতে দিন

বাচ্চাকে প্রতিদিন স্কুলে যেতে উৎসাহ দিবেন। বাচ্চা‌ প্রতিদিন স্কুলে গেলে তার পড়ার একঘেয়েমি দূর হবে। তার ক্লাসের সহপাঠীদের নিয়ে একসাথে পড়াশোনা করলে তার আগ্রহ বাড়বে। যখন সে দেখবে তার অন্য সহপাঠী তার থেকে বেশি পড়া পারে‌ তখন তার মাঝে কম্পিটিশন জাগবে, পরে‌ সে নিজে থেকেই পড়া শিখে আসবে। আবার তার থেকে যে বাচ্চা পড়াশোনায় দুর্বল যখন সে দেখবে তার সেই সহপাঠী থেকে সে বেশি পড়া পারছে তখন তার উৎসাহ জাগবে। সে নিজে থেকেই তার সেই সহপাঠী থেকে আরো ভালো করার চেষ্টা করবে। ‌

বাচ্চাকে নিয়ে মাঝে মাঝে ঘুরতে ‌যান

বাচ্চাকে নিয়ে মাঝে মাঝে এমন কিছু জায়গায় ঘুরতে যান যেখানে বাচ্চারা আনন্দের সাথে অনেক কিছু শিখতে পারে। অথবা স্কুল থেকে বিভিন্ন ঐতিহাসিক স্থানে যাওয়ার সময় আপনার বাচ্চাকেও সাথে যেতে দিন এতে করে তার পড়াশোনার একঘেয়েমি দূর হবে এবং আনন্দের সাথে অনেক কিছু শিখতে পারবে।

বাচ্চাদের মোবাইল ফোন থেকে দূরে রাখুন

বাচ্চাদের অবশ্যই মোবাইল ফোন থেকে দূরে রাখতে হবে। এমন না যে মোবাইল ফোনের সব কিছু খারাপ। কিন্তু বাচ্চারা তো ভালো কোনটা, মন্দ কোনটা বুঝতে পারে না। আপনি যদি বাচ্চাকে সবসময় মোবাইল হাতে দিয়ে রাখেন, সে কোনো সময় পড়াশোনায় মনোযোগী হতে পারবে না। যখন কোনো কিছু শেখার তখন মোবাইল হাতে দিন এছাড়া বাচ্চাদের মোবাইল হাতে দেওয়া উচিত নয়।

পরিবারের সবাই এগিয়ে আসা

বেশিরভাগ পরিবারে দেখা যায় বাচ্চাদের মা-ই পড়াশোনার বিষয়টা খেয়াল রাখে। এতে করে বাচ্চাদের একঘেয়েমি লাগে এবং মায়েরাও বিরক্ত হয়। তাই পরিবারে যারা থাকে সবাই একটু একটু করে বাচ্চার পড়ার দায়িত্ব নিলে বাচ্চারও ভালো লাগে এবং বাচ্চাদের মায়েদেরও একটু রেস্ট হয়। কথার ফাঁকে ফাঁকে, কাজের ফাঁকে ফাঁকে, খেলার ছলে পরিবারের সবার দায়িত্ব নিতে হবে‌ পড়ানোর। এতে করে বাচ্চা কোন ফাঁকে কোনটা শিখছে সেও বুঝতে পারবেনা।

ছাড় দেওয়া

পড়াশোনার জন্য শিশু যখন ব্যস্ত তখন অন্যান্য বিষয়গুলোতে শিশুকে ছাড় দিন। পরীক্ষা সারা বছর থাকবে না এই বিষয়টা নিজে মানুন এবং তাকেও জানিয়ে দিন।

বিভিন্ন মাধ্যম একত্রিত করুন: আপনার সন্তানের শিক্ষার জন্য শুধু একটি বই যদি বারবার পড়াতে থাকেন তাহলে তো একঘেয়ে হয়ে যাবে। তাই বিভিন্ন মাধ্যম থেকে তথ্য একত্রিত করুন।

শিশুদের কথা বলতে দিন

শিশুকে বিভিন্ন রকম প্রশ্ন করুন। যে উত্তরটা সে দিতে পারবে না সেটা তাকে বুঝিয়ে বলুন। এবং সে কোনো প্রশ্ন করলে তার উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করুন।

জ্ঞান বৃদ্ধির দোয়া শিক্ষা দিন

স্মরণ শক্তি বা জ্ঞান বৃদ্ধির জন্য নিম্নোক্ত দোয়া শিক্ষা দিন।

উচ্চারণ- রাব্বি জিদনি ইলমা। অর্থ- হে আমার পালনকর্তা! আমার জ্ঞান বৃদ্ধি করুন।

শেষ কথা

সুতরাং বাচ্চাদের পড়াশোনা নিয়ে টেনশন করবেন না। অবশ্যই আপনার বাচ্চাকে আপনার থেকে কেউ বেশি বুঝে না। তবে এই কৌশল গুলো আপনার এবং আপনার বাচ্চার জীবনে সুন্দর একটা ভূমিকা রাখবে।

Share this article

Expert Team
Lives in Bangladesh
এডিটোরিয়াল স্টাফ হলো স্টাডিকরো’র একটি কনটেন্ট রাইটিং এক্সপার্ট টিম। যারা কিনা এই শিক্ষণীয় প্লাটফর্মকে আরো বেশি তথ্য সমৃদ্ধ করতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
Comments
guest
0 Comments
Inline Feedbacks
View all comments

Related articles

সামান্তরিকের পরিসীমা নির্ণেয়র সূত্র

সামান্তরিকের পরিসীমা নির্ণয়ের সূত্র

সামান্তরিকের পরিসীমা নির্ণয়ের সূত্র জানতে স্টাডিকরোতে আসার জন্য ধন্যবাদ। একদম সহজ ভাষায় সামান্তরিকের পরিসীমা নির্ণেয়র সূত্র বোঝানো হয়েছে এই পোস্টে। চলুন জেনে নিই সামান্তরিকের পরিসীমা নির্ণয়ের সূত্রটি। সামান্তরিকের পরিসীমা নির্ণয়ের

সামান্তরিক কাকে বলে

সামান্তরিক কাকে বলে ও বৈশিষ্ট্য

সামান্তরিক কাকে বলে ও সামান্তরিকের বৈশিষ্ট্য জানতে এই লেখাটি পড়ুন। সামান্তরিক কাকে বলে ও বৈশিষ্ট্য খুব সহজ সরল ভাষায় বর্ণনা করা হয়েছে এই ব্লগ পোস্টে। প্রথমেই জেনে নিন, সামান্তরিক কাকে

শারীরিক শিক্ষা কাকে বলে

শারীরিক শিক্ষা কাকে বলে: লক্ষ্য, উদ্দেশ্য  ও প্রয়োজনীয়তা

যন্ত্রমুখী জীবনযাপনে মানুষ দিনে দিনে আধুনিক হয়েছে সত্য, তবে তার সাথে হয়ে উঠেছে অলস ও কর্মবিমুখী। এর ফলে নানা শারীরিক আর মানসিক সমস্যায় মানুষ জর্জরিত। এটিই এখন মানুষের জীবনের সবচেয়ে বড়ো সমস্যা।

English blog

ক্যাটাগরি

অনুসন্ধান করুন

সঠিক কিওয়ার্ড লিখে খুঁজে নিন আপনার দরকারি পোস্টটি!

Share this page
বাচ্চাদের পড়ালেখায় মনোযোগী করার উপায়

বাচ্চাদের পড়ালেখায় মনোযোগী করার উপায় | শিশুদের পড়া শেখানোর পদ্ধতি

https://www.studykoro.com/easy-way-to-teach-childs/

Report this book

Let us know if you notice any incorrect information about this PDF book. Also, please let us know if the given PDF file is banned for sharing; we will remove it as soon as possible. 

User Profile Picture

YourName