Table of Contents
এইচএসসি পরীক্ষা শেষ হওয়ার পরপরই শিক্ষার্থীদের মধ্যে টেনশন শুরু হয়। কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স হবে, কেমন সাবজেক্ট আসবে; এই সকল বিষয় নিয়ে। ভালো বিশ্ববিদ্যালয় না কি ভালো সাবজেক্ট কোনটা প্রাধান্য দেওয়া উচিত? অনেকে বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রিক এডমিশন প্রস্তুতি নিয়ে থাকেন। এক্ষেত্রে দেখা যায় কেউ ভার্সিটি, কেউ মেডিকেল বা ইঞ্জিনিয়ারিং এডমিশন প্রস্তুতি নিয়ে থাকেন। আবার অনেকে ইউনিট বা অনুষদ ভিত্তিক প্রস্তুতি নিয়ে থাকেন। যেমন- ধরুন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির কথাই বলি।
এখানে মূলত ৮ টি ইউনিটের পরীক্ষা হয়ে থাকে। যেমন- বিজ্ঞান অনুষদের জন্য ‘ক’ ইউনিট, সামাজিক বিজ্ঞান ও কলা অনুষদের জন্য ‘খ’ ইউনিট, ব্যবসায় শিক্ষার জন্য ‘গ’ ইউনিট, বিভাগ পরিবর্তনের জন্য ‘ঘ’ ইউনিট, চারুকলা অনুষদের জন্য চারুকলা ইউনিট, আইবিএ ইউনিট, হোম ইকোনোমিক্স ইউনিট এবং আইসিটি ইউনিট। ভর্তি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে পরীক্ষার্থীরা আলাদা আলাদা অনুষদ বা ইউনিটের জন্য প্রস্তুতি নিয়ে থাকেন। অনেকেই তাদের আশানুরূপ সাবজেক্ট না পেয়ে হতাশ হয়ে যান।
ভর্তি পরীক্ষার সময় সকল পরীক্ষার্থী একের অধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা দিয়ে থাকেন। অনেকে একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেয়ে যান। তখন শিক্ষার্থী ভাবতে থাকেন কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবে, অনেকে আবার তার পছন্দের সাবজেক্ট পান না। ভালো সাবজেক্ট পাওয়ার পরেও বিশ্ববিদ্যালয় তার পছন্দের হয় না। আবার বিশ্ববিদ্যালয় পছন্দের তালিকায় আছে কিন্তু ভালো সাবজেক্ট আসে নাই; তখন তারা কোনটাকে প্রাধান্য দিবেন?
বিশ্ববিদ্যালয়ের থেকে সাবজেক্টকে আগে প্রাধান্য দেওয়া উচিত।
বিশেষজ্ঞদের মত
শিক্ষার্থী কোন সাবজেক্টে পড়তে আগ্রহী সেই সাবজেক্টে পড়াশোনা করলে তার সেই বিষয়ে বেশি জ্ঞান বিকশিত হবে।
বিশ্ববিদ্যালয় না কি সাবজেক্ট: কোনটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ?
বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সময় বেশিরভাগ শিক্ষার্থী এই বিষয় নিয়ে বিতর্ক করেন। তাদের পছন্দ অনুযায়ী কিছু বিশ্ববিদ্যালয়কে তালিকাভুক্ত করেন। কিন্তু ক্যারিয়ার এক্সপার্টদের মতে, অনেক শিক্ষার্থী তার পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাওয়ার পরও ভালো সাবজেক্ট না হওয়ায় বিষণ্ণতায় ভুগেন।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে সকল সাবজেক্ট অনুযায়ী চাকরির ব্যবস্থা নেই। কবি লেখকদের ভাষায়, “আমরা পড়াশোনা করব জ্ঞান অর্জনের জন্য।”
কিন্তু বাস্তবতা তার ভিন্ন। আমরা পড়াশোনা করি ভালো চাকরির জন্য। কীভাবে অর্থ উপার্জন করা সম্ভব, চাকরির বাজারে কোন বিষয়ের গুরুত্ব বেশি সেই দিকে লক্ষ্য রেখে সাবজেক্ট নির্বাচন করতে হবে। আপনি আপনার পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয়ে খুব বেশি হলে ৬ বছর পড়াশোনা করার সুযোগ পাবেন। তার পরবর্তী ধাপ হবে চাকরি, গবেষণা ইত্যাদি ইত্যাদি। আপনি কোথাও চাকরি করতে গেলে সবার আগে দেখা হবে আপনি কোন সাবজেক্টে পড়াশোনা করেছেন। সেই অনুযায়ী আপনাকে মূল্যায়ন করা হবে।
যখন কোনো প্রতিষ্ঠান চাকরি বিজ্ঞপ্তি দেয় তখন কোথাও উল্লেখ থাকে না কোন কোন বিশ্ববিদ্যালয়কে প্রাধান্য দেওয়া হবে। উল্লেখ থাকে কোন কোন সাবজেক্টকে প্রাধান্য দেয়া হবে।
তাই বিশ্ববিদ্যালয়কে প্রাধান্য না দিয়ে সাবজেক্টকে প্রাধান্য দেওয়া উচিত।
বিশ্ববিদ্যালয় কোনো ফ্যাক্ট না!
আপনি দেশের নাম করা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন কিন্তু আপনার সিজিপিএ কম। আবার অন্য জন সাবজেক্ট চয়েজ করে সাধারণ একটা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভালো সিজিপিএ পেয়েছে। এখানে সবার আগে প্রাধান্য দেওয়া হবে ভালো সিজিপিএ প্রাপ্ত ব্যক্তিকে।
আপনার পারিপার্শ্বিক সুবিধা অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন করবেন। কোথায় থাকলে সুবিধা হবে, আপনার বাসা থেকে দূরত্ব কেমন? আপনি দূরে অবস্থান করতে পারবে কিনা? বাহিরের খাবার, পরিবেশ ইত্যাদি বিষয়গুলো দেখে বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন করলে ভালো হবে।
নিজের মনের কথা শুনুন
আমাদের সবার মধ্যেই ছোট বেলা থেকে স্বপ্ন থাকে। আমি বড় হয়ে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, শিক্ষক, গবেষক, ব্যাংকার, লেখক, বিজ্ঞানী, পুলিশ, আর্মি ইত্যাদি ইত্যাদি হব। আপনার স্বপ্নের কথা ভাবুন। কোন সাবজেক্ট কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করলে আপনি আপনার স্বপ্ন পূরণ করতে পারবেন। দিন শেষে যেন আপনার আফসোস না থেকে যায়। তাই সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে ভুল করবেন না।