রাশিয়া সম্পর্কে আমাদের অনেকেরই কৌতুহল রয়েছে। আমরা সকলে ছোটোবেলা থেকে পড়ে আসছি দুনিয়ার সবচেয়ে বড় দেশ রাশিয়া, কিন্তু আমরা অনেকেই হয়তো জানিনা রাশিয়া কতটা বড়। সমগ্র রাশিয়ার ভূমি প্লুটো গ্রহের মোট ভূপৃষ্ঠের আয়তনের সমান! এটি ওশেনিয়া, ইউরোপ, এন্টাকটিকা মহাদেশ এর চেয়েও বড়। রাশিয়ায় রয়েছে ১৩টি টাইমজোন! রাশিয়া একমাত্র দেশ যাদের ১৬টি দেশের সাথে সীমান্ত রয়েছে! রাশিয়ার ব্যাপারে এমন আরো অদ্ভুত ও বিস্তারিত তথ্য জানতে হলে পড়তে হবে সম্পূর্ণ পোস্টটি।
রাশিয়ার ইতিহাস
শুরুতেই জেনে নেওয়া যাক, রাশিয়ার ইতিহাস। রাশিয়ার ইতিহাসকে আমরা ৫ ভাগে ভাগ করতে পারি।
প্রাচীন রাশিয়া: অনেক আগে, রাশিয়ায় পূর্ব স্লাভিক এবং ফিনো-ইউগ্রিক জাতি নামে বিভিন্ন জনগোষ্ঠী ছিল। ৮৮২ খ্রিস্টাব্দে কিয়েভান রুশ নামে একটি দেশ গঠনের জন্য এই দলগুলির একত্রিত হওয়ার মধ্য দিয়ে রাশিয়ার গল্প শুরু হয়। তবে, গ্রীক বণিকরা অনেক আগে তানাইস এবং ফানাগোরিয়ায় এসেছিল এবং তাদের কিছু সংস্কৃতি তাদের সাথে নিয়ে এসেছিল। গেলোনাস নামে একটি বড়ো বসতি ছিল যা গ্রীকদের দ্বারা নির্মিত হয়েছিল এবং বুডিনি নামে আরেকটি দল।
এই এলাকা অল্প সময়ের জন্য রোমান সাম্রাজ্যের অংশ হয়ে যায়। পরবর্তীকালে, গোথ নামক কিছু লোক কৃষ্ণ সাগরে চলে যায় এবং তাদের নিজস্ব রাজ্য ছিল। কিন্তু তারা শেষ পর্যন্ত হুন নামক আরেকটি দলের কাছে পরাজিত হয়। এই সময়ে, বোসপোরান রাজ্যটি গ্রীক উপনিবেশ নিয়ে গঠিত ছিল, তবে তারা প্রায়ই ইউরোপের অন্যান্য অংশ থেকে যাযাবরদের দ্বারা আক্রান্ত হয়েছিল।
মোঙ্গলদের আক্রমণের ফলে কিয়েভান রুশ ১২৩৭ থেকে ১২৪০ খ্রিষ্টাব্দে বিভক্ত হতে শুরু করে রাশিয়ার প্রায় অর্ধেক জনগণ মারা যায়।
মধ্যযুগের রাশিয়া: ত্রয়োদশ শতাব্দীর পর মস্কো সাংস্কৃতিক কেন্দ্র হয়ে ওঠে এবং অষ্টাদশ শতাব্দীতে রাশিয়ার জারতন্ত্র বিকাশ লাভ করে রুশ সাম্রাজ্যে পরিণত হয়, যা পূর্ব পোল্যান্ড থেকে প্রশান্ত মহাসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। সে সময় প্রায়ই কৃষক বিদ্রোহ লেগে থাকতো এবং সবগুলো বিদ্রোহ কঠোর হস্তে দমন করা হয়। ১৯০৬ সালের সংবিধান ও স্টেট দুমা অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে মুক্ত ও স্বাধীন করার চেষ্টা করে, কিন্তু জারগণ তাদের স্বৈরশাসন ত্যাগ বা তাদের ক্ষমতা বণ্টন করতে নারাজ ছিলেন।
রুশ বিপ্লব: রুশ বিপ্লব হলো ১৯১৭ সালে সামরিক পরিবর্তনের একটি ঘটনা যা রাশিয়ায় ঘটে। এটি একটি সামরিক বিপ্লব ছিল যা রাশিয়ান ইম্পেরিয়ার নিরসন করে রাশিয়ান সমাজের প্রথম সাম্যবাদী সরকারের উদ্ভব করে। এটি একটি সামরিক বিপ্লব ছিল যা রাশিয়ান সমাজের ধার্মিক, রাজনৈতিক এবং সামাজিক পরিবর্তনের সূচনা করে। প্রথম বিপ্লবের মাধ্যমে রাশিয়ার জার শাসিত সম্রাজ্য ভেঙ্গে পড়েছিল।
এই সময় বিপ্লবীরা জার রাজাতন্ত্রের শেষ সম্রাট দ্বিতীয় নিকোলাসকে উৎখাত করে একটি অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠন করে। এই সরকার গঠিত হয়েছিল বিভিন্ন দলের সমন্বয়ে। এই ঘটনার মধ্য দিয়ে রাজতন্ত্রের পরিবর্তে রাশিয়া প্রজাতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরিণত হয়। এই সময় অস্থায়ী সরকারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন প্রিন্স লভোভ। দ্বিতীয় পর্যায়ে এই দায়িত্ব গ্রহণ করেন সমাজতন্ত্রী আইনজীবী এবং সমাজতন্ত্রে বিশ্বাসী আলেকজান্ডার কেরেনস্কি। ক্ষমতায় আসার পর তিনি বহু গুরুত্বপূর্ণ আইন পাস করেছিলেন কেরেনস্কি।
১৯১৭ খ্রিষ্টাব্দের ৭ই নভেম্বর পেত্রোগাদের নেভা নদীর একটি জাহাজ থেকে বলশেভিক দলের পক্ষ থেকে লেনিন বিপ্লবের ঘোষণা দেন। ওই দিনই বলশেভিকরা পেত্রোগাত দখল করে নেয়। এই সময় রাষ্ট্রের বহু গুরুত্বপূর্ণ ভবন ও প্রতিষ্ঠান বিপ্লবীদের দখলে চলে যায়। এর মাধ্যমে ধীরে ধীরে বলশেভিকরা সমাজতান্ত্রিক রাশিয়া গড়ে তোলার পথে অগ্রসর হয়। এই সময় প্রতিবিপ্লবী ওয়াট গার্ডরা বিভিন্ন স্থানে তখন বলশেভিকদের সাথে যুদ্ধ চালিয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত চূড়ান্তরূপে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয় বলশেভিক দল। বলশেভিকদের এই বিজয়ের মধ্য দিয়ে সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা পায় রাশিয়ায়। এর ভিতর দিয়ে রুশ বিপ্লবের পরিসমাপ্তি ঘটে।
সোভিয়েত যুগ: ১৯২২ থেকে ১৯৯১ সালের রাশিয়ার ইতিহাস হল সোভিয়েত সমাজতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র ইউনিয়ন বা সোভিয়েত ইউনিয়নের ইতিহাস। ১৯২২ সালের ডিসেম্বর মাসে রুশ কমিউনিস্ট পার্টির নেতারা এই মতাদর্শ ভিত্তিক ইউনিয়ন প্রতিষ্ঠা করে। সেই সময়ে নতুন দেশটিতে চারটি সাংবিধানিক প্রজাতন্ত্র যুক্ত হয়, সেগুলো হল রুশ সোভিয়েত ফেডারেটিভ সোশ্যালিস্ট রিপাবলিক, ইউক্রেনীয় সোভিয়েত সোশ্যালিস্ট রিপাবলিক, বেলারুশীয় সোভিয়েত সোশ্যালিস্ট রিপাবলিক এবং ট্রান্সককেশীয় সোভিয়েত ফেডারেটিভ সোশ্যালিস্ট রিপাবলিক।
পৃথিবীর প্রথম সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র ছিল সোভিয়েত ইউনিয়ন। আয়তনে সোভিয়েত ইউনিয়ন ছিল পুরো উত্তর আমেরিকা মহাদেশের সমান। ১৯৯০ এর দশকের শুরুতে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে ১৫টি স্বতন্ত্র স্বাধীন রাষ্ট্র জন্ম লাভ করে।সোভিয়েত যুগে কিছু উল্লেখযোগ্য প্রযুক্তিগত সাফল্য এসেছিল যার মধ্যে ছিল বিশ্বের প্রথম মহাকাশযান ও প্রথম নভোচারী। ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পর সোভিয়েতের রুশীয় প্রজাতন্ত্র রুশ ফেডারেশন হিসেবে গঠিত হয় ও একক রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃত হয়।
বর্তমান কালের রাশিয়া: সোভিয়েত ইউনিয়ন পতনের পর লাখ লাখ মানুষ আর্থিকভাবে বিপাকে পড়েন। সোভিয়েতের পতনের পর সেখানকার মানুষকে প্রচুর দুঃখকষ্ট ভোগ করতে হয়েছে। লাখ লাখ মানুষ গরিব হয়ে পড়েছিলেন এবং অর্থকষ্টের বিরুদ্ধে তাদের প্রতিদিন লড়াই করতে হয়েছে। রাশিয়া এরপর কমিউনিজম ছেড়ে ক্যাপিটালিজমের পথ নেয়। ৩১ ডিসেম্বর, ১৯৯৯ সালে ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি হিসেবে রুশ প্রজাতন্ত্রের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন ভ্লাদিমির ভ্লাদিমিরোভিচ পুতিন।
ইতিহাস বিষয়ক আরও লেখা পড়তে ঘুরে ইতিহাস পাতা থেকে
তিনি দ্বায়িত্ব নেয়ার পর ২০ বছরে রাশিয়ার চেহারা বদলে দেন। পুতিন তার সময়কালে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এনেছেন। এছাড়াও, তিনি রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণাধীন চেচনিয়ায় ২য় চেচেন যুদ্ধের মাধ্যমে অঙ্গরাজ্যগুলোর অখণ্ডতা বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছেন। পুতিনের রাষ্ট্রপতি থাকাকালীন সময়ে রাশিয়ায় অর্থনৈতিক ভিত মজবুত হয়। ৯ বছরের মধ্যে জিডিপি ৭২% বৃদ্ধি পায়। দারিদ্র্য কমপক্ষে ৫০% কমে যায়। গড় মাসিক বেতন ৮০ থেকে ৬৪০ ডলার বৃদ্ধি পায়। অবশ্য তিনি স্বৈরাচার এর তকমা পেয়েছেন। বিরোধীদের কঠোর হাতে দমন করেছেন। তবে এখনও তিনি ব্যাপক জনপ্রিয়।
রাশিয়ার ভৌগলিক অবস্থান ও আকার
মধ্য, উত্তর ও পূর্ব ইউরোপ এবং উত্তর এশিয়া জুড়ে রাশিয়ার অবস্থান। রাশিয়া পৃথিবীর বৃহত্তম দেশ। পৃথিবীর বাসযোগ্য ভূমির আট ভাগের এক ভাগেরও বেশি ভূমি নিয়ে গঠিত রাশিয়া। ১৭,০৭৫,৪০০ বর্গকিলোমিটার আয়তন নিয়ে এটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় দেশ। এটি ৪১° উত্তর অক্ষাংশ হতে ৮২° উত্তর অক্ষাংশের এবং, এবং ১৯° পূর্ব দ্রাঘিমা হতে ১৬৯° পশ্চিম দ্রাঘিমা পর্যন্ত বিস্তৃত এবং ওশেনিয়া, ইউরোপ এবং অ্যান্টার্কটিকা—এই তিনটি মহাদেশের চেয়েও আকারে বড়ো। প্লুটো গ্রহের সমান পৃষ্ঠভূমি দ্বারা গঠিত।
রাশিয়ার জনসংখ্যা
বর্তমানে রাশিয়ার জনসংখ্যা ১৪ কোটি ৪৪ লাখ ৩৮ হাজার ৫৫৪ জন। রাশিয়ার জনসংখ্যার দিক থেকে রাশিয়া নবম অবস্থান দখল করে আছে। রুশ ফেডারেশনের জনসংখ্যা প্রতি বছর আড়াই লাখেরও বেশি কমছে। অর্থাৎ প্রতি দিন ৭০০ জন করে মানুষ কমছে দেশটির। ২০১৮ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী দিমিত্রি মেদভেদেভ ঘোষণা দেন, জনসংখ্যা বৃদ্ধির এই ঋণাত্মক প্রবণতার সমস্যার সমাধান করাই বাজেটে অগ্রাধিকার পাবে। রাশিয়ার জনসংখ্যা চলতি শতকের মাঝামাঝিতে দশ কোটিরও বেশি কমে যেতে পারে। তবে, উত্তর ককেশাসে মুসলিমপ্রধান এলাকাগুলোতে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার বেশি।
রাশিয়ার আবহাওয়া ও জলবায়ু
শীতকালে বাতাসের তাপমাত্রা শূন্য ডিগ্রি থেকে নীচে নেমে যায়, গড়ে -২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন -৫০-এ নেমে যায়। গ্রীষ্মকাল বেশ গরম হয়ে থাকে। তাপমাত্রা ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি এবং কিছু জায়গায় ৩৫ ডিগ্রিও হয়ে থাকে। বিভিন্ন অঞ্চলে গড় বার্ষিক বৃষ্টিপাত ৫০০ থেকে ২০০০ মিলিমিটার পর্যন্ত হয়। সামুদ্রিক অঞ্চলে গ্রীষ্মে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়, তাই খুব বেশি গরম হয় না এবং শীতকালে হালকা শীত থাকে।
রাশিয়ার সামরিক শক্তি
রাশিয়া পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম সামরিক শক্তি। রাশিয়ার নিয়মিত সেনা সদস্য ১০,০০,০০০ রিজার্ভ আর্মি ২০,০০,০০০ এবং আধা-সামরিক বাহিনীতে রয়েছে ৪,৪৯,০০০ জন সদস্য। রাশিয়ার রয়েছে ২২,৭১০টি সাঁজোয়াা ট্যাংক, একটি বিমানবাহী যুদ্ধজাহাজ, ১৫টি উভচর যুদ্ধজাহাজ, পাঁচটি ক্রুজার, ১৪টি ডেস্ট্রয়ার যুদ্ধজাহাজ, পাঁচটি ফ্রিগেট, ৭০টি করভিট যুদ্ধজাহাজ, ৩৩টি নিউক্লিয়ার সাবমেরিন, ১৭টি সাবমেরিন, ১,২৬৪টি যুদ্ধবিমান, ১৯৫টি বোমারু বিমান, ১,২৬৭টি জঙ্গিবিমান, ১,৬৫৫টি সাঁজোয়া হেলিকপ্টার এবং ১২ হাজার পরমাণু অস্ত্র। রাশিয়ার সামরিক বাজেট ৬৫.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
যা মোট জিডিপির ৫.৪%। এটি দুনিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম সেনাবাহিনী। রাশিয়ার কাছে যেই পরিমাণ পারমানবিক বোমা রয়েছে তা দিয়ে গোটা দুনিয়াকে বেশ কয়েকবার ধ্বংস করা যেতে পারে। রাশিয়ার তৈরি একে ৪৭ রাইফেল পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হওয়া রাইফেল।
রাশিয়ায় পর্যটন
রাশিয়া পর্যটনের জন্য একটি সমৃদ্ধ দেশ। এটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, ঐতিহ্য, সাংস্কৃতিক সমৃদ্ধতা এবং তার ভৌগোলিক পৃষ্ঠভূমির জন্য পরিচিত। রাশিয়াতে পর্যটনের জন্য কয়েকটি আদর্শ স্থান রয়েছে:
- মস্কো: রাশিয়ার রাজধানী এবং এটি একটি মহানগরী যা ঐতিহ্য, সাংস্কৃতিক সমৃদ্ধতা এবং দূর্গের উপাদানের জন্য পরিচিত। এখানে আপনি মস্কো ক্রিমলিন, সেন্ট বাসিলকাঠেড্রাল, রাশিয়ান সাংস্কৃতিক সেন্টার ইত্যাদি দেখতে পারেন।
- সেন্ট পিটার্সবার্গ: এটি রাশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর এবং এটি প্রশান্ত মহাসাগরের পাশে অবস্থিত। এখানে আপনি সেন্ট পিটার্সবার্গ দূর্গ, আর্মিটেজ মিউজিয়াম, হেরমিটেজ মিউজিয়াম, নীবা বাত্যানিকফ ইত্যাদি দেখতে পারেন।
- সোচি: যদি আপনি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের দিকে আকর্ষিত হন, তবে সোচি পর্যটনের জন্য আদর্শ স্থান। এটি একটি সার্কলার সাগরের মধ্যে অবস্থিত একটি ছোটো দ্বীপ এবং এর সুন্দর সৈকত ও বিভিন্ন প্রাণী দ্বারা সমৃদ্ধ।
- কামচাটস্কি: এটি বাইকাল সাগরের কাংস্কায়া বিপশাগর এলাকায় অবস্থিত একটি শহর। এখানে আপনি সাগরের সৌন্দর্য এবং নদীর চর ভ্রমণ করতে পারেন।
- কাজান: কাজান একটি প্রাকৃতিক স্পর্শিত আয়ারল্যান্ড এবং এটি সারস উদ্ভিদ ও প্রাণী জীবনের জন্য পরিচিত। এখানে আপনি একটি কাজান প্রাকৃতিক পার্ক, সংরক্ষিত এলাকায় ভ্রমণ করতে পারেন এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, হিমশৈ্লী উপভোগ করতে পারবেন।
- কজিবেক্কিয়া: কজিবেক্কিয় অঞ্চলটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য পরিচিত। এখানে আপনি পর্বত, মোনাস্টিরস্কি কম্পলেক্স, পান্থেনকিয়া হড়, এবং ঐতিয্যবাহী দূর্গ ইত্যাদি দেখতে পারেন।
- বৈলকণ: বৈলকণ একটি প্রাকৃতিক উপকূল এলাকা যেখানে বিয়ার্সকিয়া পর্বতশ্রেণী রয়েছে। এটি একটি আদর্শ স্থান পাহাড়ের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য।
এই ছোটো উদাহরণগুলি ছাড়াও রাশিয়ায় আরও অনেক পর্যটনস্থল রয়েছে। যা আপনাকে অভিভূত করবে। আপনি যদি ভ্রমণ পিপাসু হয়ে থাকেন, তাহলে রাশিয়া আপনার জন্য আদর্শ গন্তব্য হতে পারে।
রাশিয়ায় ধর্ম
রাশিয়ায় ৪৭.৩% খ্রিস্টান, ৪১% রাশিয়ান অর্থোডক্সি, ৬.৩% অন্যান্য খ্রিস্টান, ৬.৫% ইসলাম, ১.২% নিওপ্যাগানিজম এবং টেংরিজম, ০.৫% বৌদ্ধ ধর্ম, ০.২% অন্যান্য ধর্ম, ২৫% ধর্ম ছাড়া বিশ্বাসী, ১৩% নাস্তিকতা, ৫.৫% অঘোষিত।
রাশিয়ায় ইসলাম
১৯১৭ সালে বলশেভিক বিপ্লবের পর রাশিয়ায় সব ধর্ম ও ধর্মীয় কর্ম নিষিদ্ধ ঘোষিত হয়েছিল। রাশিয়ায় ইসলাম ধর্ম ৭০ বছর যাবত প্রকাশ্যে বিকশিত হতে পারেনি। ইসলামের শিক্ষা, প্রচার-প্রসার, দাওয়াত ও তাবলিগ বন্ধ ছিল। ১৯৯১ সালে ধর্মীয় স্বাধীনতা আইন পাস হলে ইসলাম আবার জাগরিত হয়। রুশ জনগোষ্ঠীর মধ্যে মুসলমানের সংখ্যা প্রায় দুই কোটি। ইসলাম রাশিয়ায় দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্ম। তাতার, উত্তর ককেশাস ও দাগেস্তান বংশোদ্ভূত স্থানীয় জনগণের মধ্যে জন্মহার বেশি। রাশিয়ায় মুসলিম জনসংখ্যার হার ক্রমে বৃদ্ধি পাচ্ছে। আশা করা যায় ২০৫০ সালের মধ্যে রাশিয়া মুসলিম প্রধান রাষ্ট্রে পরিণত হবে।
প্রশ্নোত্তর
এই পর্বে আমরা প্রশ্নোত্তরে রাশিয়া সম্পর্কে আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানব।
রাশিয়া কোন মহাদেশে অবস্থিত?
রাশিয়া ইউরোপ এবং এশিয়া উভয় মহাদেশে অবস্থিত। রাশিয়া উত্তর এশিয়া ও পূর্ব ইউরোপের অন্তর্গত।
রাশিয়ার মুদ্রার নাম কি?
রাশিয়ার মুদ্রার নাম রুবল। এটি আরও ২টি আংশিকভাবে স্বীকৃত দেশ আবখাজিয়া এবং দক্ষিণ ওসেটিয়াতেও ব্যবহৃত হয়।
রাশিয়ার রাজধানীর নাম কি?
রাশিয়ার রাজধানী মস্কো। এটি সর্ববৃহৎ রাজধানী শহর।
রাশিয়ার আয়তন কত?
রাশিয়ার আয়তন ১৭,০৭৫,৪০০ বর্গকিলোমিটার। যা পৃথিবীতে সর্বোচ্চ।
রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর নাম কি?
রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মিখাইল মিশুস্তিন। তিনি ২০২০ সালের ১৫ জানুয়ারি থেকে দ্বায়িত্বে আছেন।
উপসংহার
রাশিয়ার সম্পর্কে মানুষের অনেক কৌতুহল রয়েছে, জ্ঞান পিপাসুদের রাশিয়া সম্পর্কে কৌতুহল নিভৃত করতে আমাদের এই প্রচেষ্টা। আশাকরি আজকের পোস্ট থেকে আপনারা রশিয়া সম্পর্কে আনেক কিছু জানতে পেরেছেন। অজানাকে জানতে আমাদের সাথে থাকুন। ধন্যবাদ।